এই মুহূর্তে খেলাধুলা

আইপিএলের স্কোরার হিসাবে দুবাই পাড়ি মুদিখানার সূর্য্যকান্তের।


সুদীপ দাস , ১৮ আগস্ট:- ২০০০ সাল নাগাদ সংসারের অভাব দূর করতে বাবার হাত ধরে ওড়িশা থেকে বাংলায় আসা সূর্য্যকান্ত পান্ডার । বাবা পূন্যচন্দ্রবাবু হুগলির চুঁচুড়ায় জেলা খাদ্য ভবনের কাছে ভাড়া থেকে রান্নার কাজ করতেন । প্রথম প্রথম বাবার সাথে হেলপার হিসাবে কাজে গিয়ে শারীরিক সমস্যা শুরু হয় । এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ মত সূর্য্যকান্তকে রান্নার কাজ ছেড়ে দিতে হয় । কিন্তু সংসারে যে বড় অভাব । তাই চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজারে বিশ্বনাথ সাঁধুখার মুদিখানার দোকানে কাজে যোগ দেয় সূর্য্যকান্ত । ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও সময় অর্থের অভাবে আর খেলা হয়নি। তবে ইচ্ছাটা ছিলোই ।

তাই চুঁচুড়া ময়দানে হুগলি স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েসনের ক্রিকেট ম্যাচগুলিতে স্কোরার হিসাবে কাজ শুরু করে। ২০১০-এ সূর্য্যকান্তের বাবা এবং ২০১৪-তে মা গত হন । এরপর মুদিখানার দোকানে কাজ করতে করতেই ক্রিকেটের নিয়মাবলি নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন তিনি । ২০১৫ সালে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েসন অফ বেঙ্গলের স্কোরার পরীক্ষায় বসে উত্তীর্ণ হন সূর্য্যকান্ত । এরপর রঞ্জি সহ একের পর এক খেলায় স্কোরার হিসাবে দ্বায়িত্ত্ব সামলান । ২০১৮ সালে সিএবির সেরা স্কোরার হিসাবে পুরস্কৃত হন। আর ২০২০-তে সরাসরি আইপিএলের স্কোরার হিসাবে সুযোগ করে নিলেন সূর্য্যকান্ত। আগামীকালই বেঙ্গালুরিতে উড়ে যাবেন তিনি । সেখান থেকে সোজা দুবাই ।

সূর্য্যের স্বপ্ন একদিন তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্কোরার হবেন । কিন্তু তারজন্য তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হবে । আইপিএলের পরই সেদিক নিয়ে ভাবতে চান তিনি । উড়িষ্যা জন্মভূমি , আর বাংলা কর্মভূমি ! সূর্য্যকাম্তের কথায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণও তো এক জায়গায় জন্মেছিলেন আর এক জায়গাকে কর্মভূমি হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন । যে মুদিখানার দোকানে সূর্য্যকান্ত কাজ করেন সেই দোকান মালিক বিশ্বনাথের কথায় দোকান কামাই করলে আমার কোন অসুবিধা নেই , ও আরও এগিয়ে যাক !