হাওড়া,২৯ এপ্রিল:- লকডাউন ভেঙেছিলেন এলাকার মানুষেরা। এতে বাধা দিয়েছিল পুলিশ। এর জেরে মঙ্গলবার হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় পুলিশের উপর আক্রমণ হয়েছিল। এমনকি পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছিল। এই ঘটনায় আহত হন দুই পুলিশকর্মী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এই ঘটনার পর বুধবার ভোররাতে পুলিশের বিশাল বাহিনী ওই এলাকায় ঢোকে। সেখান থেকে এই ঘটনায় ১০ অভিযুক্ত গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, আইন ভঙ্গ সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বুধবার সেখানে আসেন পুলিশের পদস্থ কর্তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ রয়েছে এলাকায়। রাজ্য সরকার সোমবার হাওড়া জেলার ‘কন্টেনমেন্ট জোন’-এর যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতেও বেলিলিয়াস রোডের নাম রয়েছে। এই এলাকা থেকে করোনা সংক্রমণের খবরও পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনার পর এলাকায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল জাবি থমাস বলেন , “অভিযুক্ত দশ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। এই ঘটনায় দু’জন পুলিশ আহত হয়েছেন”। গতকালের টিকিয়াপাড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী লকডাউন শুরু হওয়ার আগে থেকে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে আপনারা বাড়িতে থাকুন। বাইরে বেরবেন না। নানাভাবে প্রচার করা হচ্ছে। সচেতন করা হচ্ছে। রেড-স্টার জোন করা হয়েছে এখানে। লকডাউন মেনে চলতে বলা হচ্ছে। কিন্তু ভীড় না কমায় পরবর্তীকালে বাজার বন্ধ করা হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ রাস্তায় টহল দিচ্ছে লকডাউন যাতে মানা হয়। এটা করতে গিয়ে গতকাল টিকিয়াপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটা ঘটনা। এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা পুলিশকে বলেছি কারা করেছে তদন্ত করে দেখতে। টিকিয়াপাড়ার মানুষ অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়। আমরা এর আগে একসঙ্গে মহরম, দুর্গাপুজো, বকরি ঈদ পালন করেছি। কোনও দিন কোনো অশান্তি হয়নি। যেখানে এর আগে কোনও ঘটনা ঘটেনি সেখানে সামান্য একটা লকডাউনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা এরমধ্যে কোনও ষড়যন্ত্র আছে বলেই আমার দৃঢ় ধারণা। যেটা পুলিশ খতিয়ে দেখবে। ওখানকার ইমাম, আমাদের সিনিয়র লিডার, বয়স্ক মানুষ যারা আছেন তাঁদের অনুরোধ করেছি যাতে মানুষ লকডাউন মেনে চলেন এবং শান্তিশৃঙ্খলা মেনে চলেন তার আবেদন তারা মানুষের কাছে করেন।” জেলার আরেক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পুলিসকে আক্রমণের পিছনে কারা আছে তা খুঁজে বার করে কঠোর শাস্তি দাবি করেন। বিরোধীরা ঘটনার সমালোচনায় সরব হয়েছে। পুলিসকে তার মতো আইন মেনে কাজ করতে দিলে এমন ঘটনা ঘটত না বলে অভিযোগ বিরোধীদের।