হাওড়া,১২ মার্চ :- দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ হোসিয়ারি পার্ক তৈরি হতে চলেছে হাওড়ায়। লিলুয়ার জগদীশপুরে হবে এই পার্ক। এরজন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থান হবে এখানে। টেক্সপ্রো বেঙ্গলে’র তত্ত্বাবধানে এটি গড়ে উঠবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়ায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সিনার্জি’তে অংশ নিয়ে একথা বলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ডঃ অমিত মিত্র। তিনি বলেন, ভারতের প্রথম হোসিয়ারী পার্ক তৈরি হচ্ছে হাওড়ায়। ইতিমধ্যে ৩-৪টি ইউনিট কাজ হচ্ছে। লিলুয়ার জগদীশপুরে ১২০ একর জায়গা নিয়ে তৈরি হচ্ছে পার্কটি। এখানে থাকবে মোট ১৭০টি ইউনিট। এই পার্কের জন্য বিনিয়োগ করা হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে এখানে বিপুল কর্মসংস্থান হবে। এই পার্কটিকে মডেল হিসেবে দেশের কাছে তুলে ধরাই তাঁদের লক্ষ্য। এটি সারা দেশের মধ্যে উদাহরণ হয়ে থাকবে। গ্লোবাল সিম্বল তৈরি করতে হবে। রাজ্য সরকার সবরকমের সহযোগিতা করছে জানিয়ে অমিত মিত্র বলেন এই হোসিয়ারি পার্কের জন্য রাস্তা, বিদ্যুতের সাব স্টেশন করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাওড়ায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ আসছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কর্মসংস্থান হবে এর মাধ্যমে। এর পাশাপাশি বিশ্ববাংলা মার্কেটিং কর্পোরেশনের পণ্য সারা দেশে পৌঁছে দিতে অনলাইন বিপণন সংস্থা ফ্লিপকার্টের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অমিতবাবু। এরজন্য তাঁদের সঙ্গে একটি চুক্তি হতে চলেছে। এতদিন বিশ্ববাংলার পণ্য শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই বিক্রি হত। অন্য রাজ্যে সেই পৌঁছে দেওয়ার মতো তাদের সেই পরিকাঠামো ছিল না। ফ্লিপকার্টের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করলে শুধু বিশ্ববাংলা সংস্থা এবং ফ্লিপকার্টের লাভ হবে না। এর পাশাপাশি এই দুই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলেই লাভবান হবেন। এদিন অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র শিল্পে হাওড়া অনেক এগিয়ে রয়েছে। দেশের ক্ষুদ্র শিল্প থেকে উৎপাদিত পন্যের ৪০ শতাংশ তৈরি হয় হাওড়ায়। প্রায় ২৭ হাজার ক্ষুদ্রশিল্প আছে হাওড়াতে। এছাড়াও এই জেলায় ৩৭টি ক্লাস্টার আছে। এদিনের সিনার্জিতে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তাতে বিভিন্ন সেক্টরে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। এর জন্য মোট বিনিয়োগ হবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। হোসিয়ারি পার্কের পাশাপাশি ফাউন্ড্রি পার্কের ক্ষেত্রেও হাওড়ার জোরকদমে কাজ চলছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ফাউন্ড্রি পার্কে ২,৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে। এখানে ৩০ হাজার কর্মসংস্থান হবে। ১০০ টা ইউনিট থাকবে। ইতিমধ্যেই ৫টি ইউনিট এসে গেছে। চলতি বছরেই পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। এদিন জেলার ৮০০টি ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোগপতিদের হাতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের তরফে মোট ১২০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের হাতে ওই চেক তুলে দেন অর্থমন্ত্রী। আগামী বুধবার এই ব্যাপারে বিভিন্ন উদ্যোগপতিদের নিয়ে জেলা শিল্প দপ্তরের উদ্যোগে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি কর্মশালা হবে বলেও তিনি জানান। হাওড়ার শরৎ সদনে এদিনের সিনার্জিতে হাওড়ার জেলাশাসক, পুরসভার কমিশনার, দমকলের ডিজি সহ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের একাধিক কর্তা ও আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।