হাওড়া,১৪ ফেব্রুয়ারি:- ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করার চেষ্টা করছে বিজেপি। ধর্মের নাম নিয়ে সেনাবাহিনীর নাম নিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই রাজনীতি বাংলার মাটিতে চলবে না। শুক্রবার হাওড়ায় এসএফআই-র এক দলীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে একথা বলেন জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। এদিন এসএফআই হাওড়া জেলা কমিটির উদ্যোগে শিবপুর আইআইইএসটি থেকে হাওড়া শরৎ সদন পর্যন্ত এক মিছিলেও অংশ নেন দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী। “শিক্ষা বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, পড়াশোনার খরচ কমাও ও জাত ধর্মের হিংসা থামাও” এই দাবিতে এদিন এই মিছিলের ডাক দেয় এসএফআই। মিছিল শেষে শরৎ সদনের সামনে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঐশী ঘোষকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঐশী ঘোষ ছাড়াও এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, হাওড়া জেলা সম্পাদিকা সুলতানা খাতুন সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ঐশী ঘোষ বলেন, বিজেপি এয়ার ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে এলআইসি সব একে একে বেচে দিচ্ছে। এরা দেশের মানুষকেও বেচে দেবে। এনআরসি, সিএএ নিয়ে এরা কোটি কোটি টাকা খরচ করছে।
আজ এনআরসি, সিএএ, এনপিআর নিয়ে শুধু জেএনইউ, জামিয়া নয় প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর সর্বত্র সবাই গর্জে উঠেছে। আরএসএস, বিজেপির বিরুদ্ধে একসাথে সবাইকে লড়াই করতে হবে। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ঐশী ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যে ইস্যু নিয়ে এসেছি, দিল্লিতেও সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে লড়াই চলছে। আজ দু’দিন পশ্চিমবঙ্গে এসে খুশি হয়েছি। দেখছি এখানকার মানুষ সিএএ, এনআরসি, এনপিআর এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। এই লড়াইটা লম্বা। কিন্তু আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। সেই বার্তা দিতেই এখানে এসেছি।পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই প্রেরণা নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে বলতে চাই এখানে একটা শাহিনবাগ নয়, এখানে কোটি কোটি মানুষ এর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এই ব্যাপারটা বোঝা দরকার শুধু একটা জেএনইউ, একটা জামিয়া কিংবা একটা ইউনিভার্সিটি নয় সব ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রী, দেশের সব নাগরিক যাঁরা সংবিধানেতে বিশ্বাস রাখেন গণতন্ত্রকে যারা বাঁচাতে চান সবাইকে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।এর বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াতে হবে। এই বার্তাই দিতে এসেছি এখানে।” এনআরসি, সিএএ ও এনপিআর বিরুদ্ধে এরাজ্যে আন্দোলনের প্রধান মুখ তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই একই কথা বলছেন। এদিন সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে ঐশী ঘোষ জানান, “অবশ্যই রাজ্য সরকার, যে যে রাজনৈতিক দল আরএসএস ও বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে সেটা ভাল কথা। দিল্লিতে আম আদমি পার্টি জিতেছে। আশা করি ওরা ইমিডিয়েটলি বিধানসভায় একটা রেগুলেশন পাশ করাবে এনআরসি, এনপিআর ও সিএএ-র বিরুদ্ধে। এ রাজ্য অন্য কোনও রাজনৈতিক দল বা পোগ্রেসিভ ফোরাম এর বিরুদ্ধে যখন লড়াই করতে যায়, তখন তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বা বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সময় আমাদের উচিত আরও মানুষের কাছে পৌঁছানো।আরএসএস ও বিজেপির মোকাবিলা করা বেশি দরকার। রাজ্য সরকারকে বুঝতে হবে যে আজকে এই ধরনের মিছিলকে আটকে দিচ্ছে এতে তাঁরা সুবিধা করে দিচ্ছে বিজেপি ও আরএসএসকেই।” এখন বিভিন্ন কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে।দীর্ঘদিন ধরে এ রাজ্যে কলেজ ও ইনস্টিটিউটগুলিতে নির্বাচন হয়নি।সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে ঐশী জানান, ২০১২ সাল থেকে এখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কি হচ্ছে তা বুঝতে পারছি। দিল্লিতে ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়নগুলি বন্ধ করে দিতে চাইছে বিজেপি ও আরএসএস।এখানেও তাই হচ্ছে। যেটা গণতন্ত্রে কাম্য নয়।