হুগলি,২৯ এপ্রিল:- মুখে বিভিন্ন রঙ মেখে কেউ সাজেন কালী, কেউ সাজেন শিব ,পার্বতী অথবা কেউ সাজে বাবা লোকনাথ। রুটি রুজির টানে সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত ভিক্ষা করে দিন গুজরান। তারকেশ্বরের জ্যোৎশম্ভু গ্রামে বসবাস করে এরা। তবে গ্রামের চলতি নাম বহুরুপী গ্রাম নামে পরিচিত। বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডে তারকেশ্বর রেল গেটের পাশে এদের বাসবাস। বাপ ঠাকুরদার পেশাকে টিকিয়ে রাখতে ভোর হতেই বিভিন্ন দেবদেবীর সাজে সজ্জিত হয়ে বেড়িয়ে পরে ভিক্ষা করতে। তারকেশ্বর থেকে ট্রেনে চেপে কোলকাতা ও শহরতলিতে যাতায়াত। সারাদিন উপবাস থেকে বিভিন্ন দোকান, বাড়ি ঘুরে রাতে ঘরে ফেরা। যেটুকু ভিক্ষার দান পায়, তা দিয়ে পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেয় এই বহুরুপীরা। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতিতে কর্মহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে এরা। বন্ধ ট্রেন চলাচল থেকে বাজার , দোকান। আগের মত নেই সকাল থেকে নিজেদের সাজিয়ে তোলার ব্যাস্ততা। এমনিতেই নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায় এদের। তার উপর লকডাউনের জেরে কঠিন পরিস্থিতির স্বীকার। পায়নি কোনও সরকারি ত্রাণ সামগ্রী। নেই কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদের আনাগোনা। গত একমাসের লকডাউনে ফুরিয়ে এসেছে ভিক্ষার ঝুলিতে থাকা দানের অর্থ। করুণ আর্জি, এই কঠিন পরিস্থিতিতে কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক তাঁদের দিকে। নেই কোনও বিকল্প আয়ের পথ। তাই কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রীনাথ বহুরুপী গল্পে এই তারকেশ্বর বহুরুপীদের একটাই ভাষা , বিভিন্ন রঙ মেখে বহুরুপী সাজলে মিলবে ভিক্ষা নচেৎ অনাহারে মৃত্যু।