কলকাতা, ৩১ জানুয়ারি:- রাজভবনের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চরম সীমায় পৌঁছল। রাজ্যপালকে ‘বিরক্ত’ হয়ে টুইটার থেকে রাজ্যপালকে ব্লক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করার সময় তিনি একথা জানান। সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করে আক্রমন শানান মমতা। পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যপালও। তাঁকে বয়কট করা মানে আদতে সংবিধান বয়কট করা বলে রাজ্য সরকারকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এর আগে রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের চিত্র দেখেই বোঝা গিয়েছিল, রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সম্পর্ক কোন তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে। এদিন ফের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তবে আমি বাধ্য হয়ে একটা কাজ করেছি। আমি দুঃখিত এর জন্য।
এর জন্য আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। উনি প্রতিদিন একটি করে টুইট করেন। কখনও অফিসারদের গালাগালি দিয়ে, কখনও আমাকে গালিগালি দিয়ে বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ তুলে, অসাংবিধানিক কথাবার্তা, অনৈতিক কথাবার্তা বলেন। আমাদের নির্দেশ দিতেন ওনার পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের চলতে হবে। পরামর্শ নয়, ওনার নির্দেশ অনুযায়ী চলতে বলতেন। তার মানে, আমরা ওনার চাকর-বাকর আর কি!” মমতা আরও বলেন, “আমরা কি বন্ডেড লেবার? আমরা নির্বাচিত সরকার হয়ে বন্ডেড লেবার! আর একটা কাউন্সিলরের কর্পোরট ইলেক্টেড না হয়েও, শুধুমাত্র নমিনেটেড হয়ে, তিনি হয়ে গিয়েছেন এখন সবার মাথার উপরে সুপার পাহাড়াদার। আমি বাধ্য হয়েছি, আজকে আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ওনাকে ব্লক করে দিতে। কারণ, প্রতিদিন আমার বিরক্তি লাগত ওনার টুইটগুলি দেখে। বারবার বিরক্ত করতেন।
যে কথাগুলি বলা উচিত নয়, যে কথাগুলি তিনি বলতেন, তা অমানবিক। এর জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আমার কিছু করার নেই। আমি অনেকদিন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। চার বার চিঠি লিখেছি। বার বার বলেছি। প্রতিদিন অফিসারদের ডেকে পাঠাচ্ছেন। এটা উনি পারেন না। উনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে পারেন। সরাসরি যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে আর সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। আমি শুনেছি, আদালত থেকে শুরু করে আয়কর, ইডি থেকে শুরু করে সিবিআই, কাস্টমস থেকে শুরু করে কলকাতা সিপি, ডিসি, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। উনি নিজেকে কী ভাবেন! বাংলার মানুষ মাথা নত করে চলে না।”মুখ্যমন্ত্রী এমনটা জানানোর পরই রাজ্যপাল টুইটারে লেখেন, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫৯-এ বলা আছে, সাংবিধানিক নিয়ম-নীতি এবং আইনের শাসনকে কেউ ব্লক করতে পারেন না।দায়িত্বপ্রাপ্তদের উচিত দেশের সংবিধানের প্রতি আস্থা রাখা।’