কলকাতা, ৭ জুলাই:- রাজ্য বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতিকে তীব্র কটাক্ষ করা হয়েছে। বাজেট সম্পর্কে নিজেদের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সেই কটাক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছে বিজেপি। উন্নয়ন প্রসঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।দলীয় বিধায়ক তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ীকে পাশে নিয়ে বিধানসভায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শুভেন্দু। উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে অনেক দিন সরব বিজেপি। বাজেটের সমালোচনায় ও উত্তরবঙ্গ প্রসঙ্গ উ্থাপন করে সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, আজকের বাজেটে যেখানে উত্তরবঙ্গ সম্পর্কে একটা শব্দও নেই। তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্পর্কেও কোনও শব্দ নেই। সেখানে আজকেই মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের দু’জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাংলার প্রতিনিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি যে খুবই খুশি একথাও জানাতে ভোলেননি শুভেন্দু।
এদিন বাজেট পড়ার সময় পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি জানিয়েছিলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার মানুষের পকেট কাটছে। নিজেদের পকেট ভরছে। কারণ যেভাবে দাম বেড়েছে পেট্রোল এবং ডিজেলের তাতে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা কোটি টাকা বাংলা থেকেই পেয়েছে কেন্দ্র সরকার এমনটাই দাবি করেছিলেন তিনি। এদিন এই প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জিকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রলের দাম বাড়াচ্ছে, এই যে ব্যাখ্যাটা কেউ কেউ করছেন, এটা ঠিক নয়। তৃণমূল পরিচালিত সরকারকে বলব, এত যদি দরদ হয়, বলছেন বিধান পরিষদ গঠন করব, আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হব, তা ৩৮ টাকা যে কর নিচ্ছেন তার ২০ টাকা ছাড় দিয়ে দিন। মে মাসের পর থেকে বেনজিরভাবে বেড়েছে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম।
শেষ কয়েক মাসের হিসাব করলে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৯.৬১ টাকা অন্যদিকে ডিজেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৮.৮৯ টাকা। যার জেরে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছে আমজনতা। এই মুহূর্তে কলকাতায় সেঞ্চুরি পেরিয়েছে পেট্রোল। এক লিটারের জন্য খরচ করতে হচ্ছে ১০০.২৩ পয়সা। শুভেন্দু অবশ্য এজন্য কেন্দ্র সরকারের দায়কে মানতে চাননি। শুধু তাই নয় এদের উত্তরবঙ্গ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পারে যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে তারা একটাও কাজ হয়নি। এখন আগামী দিনে শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পাল্টা কিভাবে দেয় তৃণমূল সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে সকলে। বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ির কটাক্ষ, বাংলার এই সরকার ত্রাণের সরকার৷ এঁরা দুয়ারে ত্রাণ পৌঁছে দেয়৷ জল জমে গেলে পাম্প দিয়ে বের করে দেয়৷ কম টাকায় খাদ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা৷
কিন্তু পরিত্রাণের বব্যস্থা করে না৷ অথছ বাংলার মানুষ চান প্রকৃত শিক্ষা, প্রকৃত কর্ম সংস্থান এবং প্রকৃত উন্নয়ন৷ বাংলার মানুষের দয়ার ভিক্ষা চান না৷ বুধবার রাজ্য বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ এরই প্রেক্ষিতে বাজেট শেষে সাংবাদিক বৈঠক করেন অশোক লাহিড়ি ও শুভেন্দু অধিকারী৷ সেখানেই শুভেন্দু এবং অশোকবাবু দু’জনেই রাজ্যের তীব্র সমালোচনা করে৷ অশোকবাবু বলেন, অর্থমন্ত্রী জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে আমাদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। দু’ব্যাগ কাগজ দিয়েছেন৷ পড়ে দেখতে হবে৷ তবে যেটুকু বুঝলাম, তাতে এই বাজেটে বাংলার পরিত্রাণের কথা তেমনভাবে নেই৷