হুগলি, ১১ সেপ্টেম্বর:- ত্রিবেণী রেল স্টেশনের উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে আজ স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখার ত্রিবেণী রেল স্টেশনের পাশে রেলের জমিতে বসবাসরত এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালানো মানুষদের উচ্ছেদের জন্য রেলের পক্ষ থেকে একটি নোটিশ লাগানো হয়েছিল। তবে সেই নোটিশে কোনো সই বা সিলমোহর ছিল না, যা এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দেয়। নোটিশ জারি হওয়ার প্রায় কুড়ি দিন পর আজ রেল কর্তৃপক্ষ বিশাল সংখ্যক জিআরপি (জিআরপি) ও আরপিএফ (আরপিএফ) বাহিনী নিয়ে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে সেখানে উপস্থিত হয়। রেল পুলিশের এই উপস্থিতি দেখে এলাকাবাসী সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধে নেমে পড়েন। জাতীয় বাংলা সম্মেলনের পক্ষ থেকে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা একসাথে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে স্থানীয় মহিলারা ত্রিপল পেতে রেলস্টেশনের পাশে বসে পড়েন এবং স্লোগান তুলে তাদের দাবি জানাতে থাকেন—উচ্ছেদ করা যাবে না। তাদের প্রধান দাবি ছিল, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কোনো অবস্থাতেই তাদের উচ্ছেদ করা যাবে না। ওই এলাকায় প্রায় একশোটি পরিবার বসবাস করে, আর প্রায় পঞ্চাশটি দোকান রয়েছে, যেগুলো তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায়।
কেউ ত্রিশ বছর ধরে, কেউ আবার কুড়ি বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করে আসছেন। এই সব মানুষজন দিন আনা দিন খাওয়া শ্রেণীর, যারা রেল কর্তৃপক্ষের আকস্মিক এই উচ্ছেদ নোটিশে ভীষণভাবে আতঙ্কিত। রেলের নোটিশ পুজোর আগে তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তারা জানিয়েছেন, পুনর্বাসনের উপযুক্ত ব্যবস্থা না করে তাদের উচ্ছেদ করা মানে তাদের জীবিকা ও বাসস্থান উভয়কেই ধ্বংস করা। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দাস ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি গৌতম দাস তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। তারা উচ্ছেদ নিয়ে স্থানীয়দের উদ্বেগ ও ক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানান এবং পুনর্বাসনের দাবিতে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত, জিআরপি-র পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে, তাদের দাবি বিবেচনা করে এই মুহূর্তে উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে। এই আশ্বাসে বিক্ষোভ সাময়িকভাবে শান্ত হয়, তবে স্থানীয়দের মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যায়।