এই মুহূর্তে জেলা

দিনভর বৃষ্টির দাপটে বিপর্যস্ত হুগলি শিল্পাঞ্চল ও গ্রামীণ এলাকার জনজীবন।


হুগলি, ৬ আগস্ট:- বর্ষার মরসুমে নিন্ম চাপের কারণে শুক্রবার রাত থেকে দিনভর হালকা বৃষ্টির দাপটে বিপর্যস্ত হুগলি শিল্পাঞ্চল ও গ্রামীণ এলাকার জনজীবন। মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির খামখেয়ালিপনায় এ দিন সকাল থেকেই প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বাজার দোকান ও কর্মস্থলে যাওয়ার তাল কাটে। তবে ভরা বৃষ্টির মধ্যেই ডিভিসি জল ছাড়ায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত। জলের দাপটে ধান ও মরসুমি সব্জি ফসলের জমিতে জল দাঁড়িয়েছে। তাতে হরিপাল, পোলবা, সিঙ্গুর ও তারকেশ্বর চত্বরে সব্জি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। সবচেয়ে বেশি জলমগ্ন হয়েছে ডাকাতিয়া খাল সংলগ্ন হরিপাল বিধানসভার সহদেব গ্রাম পঞ্চায়েতের কালুবাটি গ্রাম। সিঙ্গুর, হরিপাল ও জাঙ্গিপাড়া ব্লকের একাংশ নিয়ে কয়েক হাজার হেক্টর চাষের জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে প্রশাসন। তবে বিকেলে বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমতেই জেলাশাসক মুক্তা আর্য, মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিরা হরিপালের প্লাবিত এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন বেচারাম মান্না।

দিনভর বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে গ্রামীণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে চাষের জমিতে জল জমে যাওয়ায় ধান ও পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, বেগুন চাষের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকেরা জানিয়েছেন বৃষ্টির জল চাষের জমিতে খুব একটা জমে নি। কিন্তু ডিভিসির ছাড়া জলে এক দিনের মধ্যেই ধান জমি জলে ভেসে যায়। মহাজনের থেকে ঋণ নিয়ে ধান রুইয়ে ছিলাম। বছরে একবার এই ফসলের উপর আমাদের রুজি রুটি। কিন্তু সব ধান জলের তলায় চলে গিয়েছে। সুকুর আলি নামে এক কৃষক বলেন, কয়েক হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ধান বসিয়ে ছিলাম। কিন্তু ডিভিসির ছাড়া জলে ডাকাতিয়া খাল লাগোয়া আমাদের জমির ধান জলের নীচে চলে গিয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সমস্যা আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করুন। শেখ নাসের আলি নামে কৃষক বলেন, ডাকাতিয়া খাল সংস্কার করা হলেও কিছু কিছু জায়গায় খাল সংস্কার করা যায় নি।

সেই কারণে ডিভিসি জল ছাড়ার কারণে ধান জমি জলে ডুবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জানিনা এই লোকসান কী ভাবে সামাল দেব।গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও বৃষ্টির দাপটে ছন্দপতন হয়েছে। বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ দোকান বাজার বন্ধই ছিল। অন্যান্য দিনের তুলনায় দুর্যোগের কারণে যানবাহনের সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। ডানকুনি, উত্তরপাড়া, কোন্নগড়, রিষড়া, শ্রীরামপুর ও চন্দননগর, চুঁচুড়া সহ ব্যান্ডেলের বিস্তীর্ণ এলাকায় লোকজনের যাতায়াত কম ছিল। শ্রীরামপুর সুপার মার্কেট, পূর্ব রেলপার ব্যবসায়ী সমিতির মতো রিষড়া বাঙ্গুর পার্কের জামা কাপড়ের অধিকাংশ দোকানে কেনাবেচা জমেনি। মাহেশ শহিদ বাজার, টিন বাজার ও মাছ বাজারে দোকান বাজার ছিল হাতে গোনা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন এমনিতেই বাজারে ইলিশ মাছ ছাড়া অন্য মাছের যোগান নেই।তার উপর বৃষ্টি বাদলে ব্যবসার দফারফা। জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, জলমগ্ন এলাকায় গুলিতে প্রশাসন নজরদারি চালাচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হুগলির আরামবাগের বিভিন্ন এলাকাও অতিবৃষ্টির কারণে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।