হুগলি, ২৮ জুলাই:- গঙ্গাদূষণ রোধ ও নাগরিক নিরাপত্তায় প্রতিমা বিসর্জনের জন্য স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তৈরির পরিকল্পনা করেছে কোন্নগর পুরসভা। দিল্লি ও মুম্বইয়ে খুবই জনপ্রিয় এই বিসর্জন ব্যবস্থা। সেই আদলেই কোন্নগরে বিসর্জনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আসন্ন দুর্গাপুজো মরশুমের আগেই এই প্রকল্প কার্যকর করার প্রয়াস শুরু হয়েছে পুরসভার পক্ষ থেকে। বিশেষ আবেদন সহ রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের কাছে প্রকল্পের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক কোটি টাকার ওই প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুরকর্তাদের দাবি, প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থবরাদ্দ, দু’টিই পাওয়া যাবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। কোন্নগর পুরসভার সাধুর ঘাটে ওই স্বয়ংক্রিয় বিসর্জন ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরকর্তারা জানিয়েছেন, জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। অনেক মানুষের ভিড় যাতে সামাল দেওয়া যায়, এমন এলাকাই বাছাই করা হয়েছে। সেই মতোই সাধুর ঘাটকে বাছাই করা হয়েছে। পুরপ্রধান স্বপন দাস বলেন, মানুষের নিরাপত্তা, দ্রুত প্রতিমা বিসর্জন এবং গঙ্গাদূষণ প্রতিরোধ— সব বিষয়কেই এক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় বিসর্জন ব্যবস্থার মডেল সহ গোটা প্রকল্প আমরা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি।
আশা করছি, তা দ্রুত অনুমোদন পাবে। রাজ্য অর্থ বরাদ্দ করবে বলে আশা করছি।পুরসভার পক্ষ থেকে স্থায়ীভাবেই এই ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। যার সুফল নাগরিকরা দীর্ঘ বছর ধরে পাবেন। প্রকল্প অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে। এই বিষয়ে কোন্নগর শহরের এক বাসিন্দা তথা বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শুভায়ন চক্রবর্তী বলেন, উন্নত শহরগুলিতে এই রকম ব্যবস্থা আছে। যে ভাবনাকে সামনে রেখে পুরসভা এই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে, তা প্রশংসনীয়। নদী দূষণ প্রতিরোধ করা গেলে সামগ্রিকভাবে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে। গত কয়েক বছর ধরেই গঙ্গাদূষণ রোধে বিসর্জনের বিকল্প ব্যবস্থা কোন্নগর পুরসভা করছিল। একটি কৃত্রিম চৌবাচ্চা বানিয়ে তাতে ক্রেন দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। গত কয়েক বছরে দুর্গাপ্রতিমা, জগদ্ধাত্রী সহ নানা সার্বজনীন পুজোয় এই উদ্যোগ দেখা গিয়েছে। এবার সেই ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও স্থায়ী করতে চাইছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধুর ঘাটে স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। যেখানে প্রতিমা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গঙ্গার নির্দিষ্ট একটি অংশে বিসর্জন করিয়ে আবার ফিরিয়ে আনা হবে। তাতে বিসর্জন যেমন হবে, তেমনই দূষণও আটকানো যাবে। আবার বিশাল প্রতিমা গঙ্গায় নামাতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। সেই সমস্যাও এড়ানো যাবে। পুরসভার এক কর্তা বলেন, বিসর্জনের আনন্দ থাকবে ষোলোআনা। এক্ষেত্রে মানবসম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতিকে শূন্যে নামিয়ে আনা যাবে।পরিবেশ রক্ষায় এটা একটা বড় ভাবনা পুরসভার।