রূপম চট্টোপাধ্যায়, ২৫ জানুয়ারি:- ১৯৯৯ এর ২২ জানুয়ারি ওড়িষার কেওনঝরের প্রত্যন্ত গ্রাম মনোহরপুরে গ্রাহাম স্টোন ও তাঁর দুই সন্তানকে পুড়িয়ে মেরেছিল বজরং দলের কর্মীরা। নেতৃত্বে ছিল দারা সিং। ২০০৩ সালে দারা সিং এর যাবজ্জীবন জেল হয়। কিন্তু গ্রাহাম স্টোনের মৃত্যুতে বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন সেবা কার্য। এমনকি তাঁর পরিচালিত কুষ্ঠ রোগীরদের চিকিৎসা কেন্দ্রটিও। গত ২২ জানুয়ারি ওই কুষ্ঠ আশ্রম আবার চালু করার দায়িত্ব নিল হারিত এর কর্ণধার তুষার ভঞ্জ। এর আগে গরিব ও প্রান্তিক মহিলাদের ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার ও শ্রমনিবিড় কৃষিকে বিস্তৃত করার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে এক নতুন দিশা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতে এই পরিকল্পনা রূপায়নে সচেষ্ট হয়েছেন ওড়িষার এই উদ্যোগপতি তুষার ভঞ্জ। তাঁর সংস্থা হারিত কৃষি নিধি ওড়িষা, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ডে প্রায় আড়াই লক্ষ মহিলাকে কুড়ি হাজার টাকা করে ঋণ দিয়েছে। খুবই কম সুদে এই ঋণ নিয়ে ওই মহিলারা কৃষি পণ্যের ও ফলের ব্যবসা করে রোজগারি হতে চেষ্টা করছেন। একটি নির্দিষ্ট কৃষি পন্য একটু বেশি পরিমাণে কিনে তা হাটে বা পাইকারি বাজারে বিক্রি করলে ঝুঁকি বিহীন আয়ের সুযোগ থাকে।
এভাবেই ধান, আলু, কুমরো, কপি, সহ নানা পন্য ও পেঁপে, ভুট্টা, ড্রাগন,আখ ইত্যাদি এক ফলের ব্যবসা বহু মহিলাকে আয়ের পথ দেখিয়েছে। কর্মসংস্থানের লক্ষে তারা পশ্চিমবঙ্গে ও আসামে বন্ধ ও রুগ্ন চা বাগানও কিনতে চলেছেন। তাঁর লক্ষ্য আগামী দিনে হারিত কৃষি নিধীকে ব্যাংক রূপান্তরিত করে ক্ষুদ্র ঋণকে সহজ লভ্য করে হোরাইজেন্টাল ডেভলবমেন্টকে সম্প্রসারিত করা। এছাড়াও তিনি তাঁর সংস্থার পক্ষ থেকে হেল্থ ক্লাবের হেল্থ ক্যাম্পে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবারের গঙ্গা সাগর মেলায়। ১৫ হাজার পূর্ণার্থী হেল্থ ক্লাবের স্বাস্থ্য পরিষেবা পেয়েছেন। তাঁর এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন বনিকসভা ও বিশিষ্ট কৃষি-অর্থনীতিক মহল। তুষার ভঞ্জ জানান, ঋণকে সহজ লভ্য করে ও কৃষি নির্ভর লাভজনক ক্ষুদ্র ব্যবসাকে সম্প্রসারিত করে পিছিয়ে পড়া মানুষকে টেনে তোলাই তার আর্থিক চিন্তার মূল ভিত্তি। এর সঙ্গে কুষ্ঠ রোগ দুর করা তার সামাজিক উদ্যোগ।