এই মুহূর্তে কলকাতা

অশান্ত মনিপুরে কিছুটা হলেও শান্তি ফিরেছে, জানালেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল রানা প্রতাপ।


কলকাতা, ১৬ ডিসেম্বর:- জাতিগত হিংসায় দীর্ণ মণিপুরে সম্পূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা এখনও দুরস্ত। তবে হিংসার ঘটনা যথা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে আনাই তাঁদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনী। শনিবার পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদর ফোর্ট উইলিয়ামে দিবস অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল রানা প্রতাপ কলিতা জানান, মনিপুরের পরিস্থিতির আগের থেকে অনেক উন্নতি ঘটেছে। হিংসার ঘটনাও অনেক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এখনো বিবাদমান দুপক্ষের হতেই প্রচুর সংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র মজুদ রয়েছে। প্রতিবেশী মায়ানমারের অশান্ত পরিবেশের সুযোগ নিয়ে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটেই চলেছে। যা এখনই সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কবে মণিপুরে শান্তি ফিরবে তা নিয়েও ভবিষ্যতবাণী করতে নারাজ তিনি। কলিতা জানান, স্থানীয় পুলিশ এবং আধা সেনাকে সঙ্গে নিয়ে সেনাবাহিনী লাগাতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যার সুফল দেখা গেছে ইতিমধ্যেই। কুকি ও মেতেইতদের বিবাদে অশান্ত মণিপুরে কিছুটা হলেও শান্তি ফিরেছে। গোষ্ঠী হিংসায় নিহতদের অন্তিম সত্কার দীর্ঘদিন আটকে ছিল। অবশেষে শুক্রবার কাংপোকিতে ১৯ জন নিহতের অন্তেষ্ঠী সম্পন্ন হয়েছে।

চূড়াচাঁদপুরেও শীঘ্রই নিহতদের অন্তেষ্ঠী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কম্যান্ডার। মণিপুরে ৩ মে থেকে শুরু হওয়া হিংসায় এ পর্যন্ত প্রায় ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কুকি-মেইতেই দ্বন্দ্বের কারণে ইম্ফল উপত্যকার সঙ্গে পাহাড়ি জেলাগুলির যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফলের মর্গে সংরক্ষিত কুকিদের মৃতদেহ জনজাতি প্রধান চূড়াচাঁদপুর, টেঙ্গনোপল এবং কাংপোকিতে পরিবারের কাছে ফেরানোয় সমস্যা ছিল। নভেম্বরে মণিপুরের একাধিক মর্গে সংরক্ষিত মৃতদেহের ‘যথাযথ ও সম্মানজনক’ সৎকারের জন্য সে রাজ্যের সরকারকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। অবশেষে, বৃহস্পতিবার চূড়াচাঁদপুর এবং কাংপোকিতে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় ইম্ফলের মর্গে রাখা ৬০ জন কুকির দেহ। একই ভাবে ফেরানো হয় ৪ জন মেইতেইর মৃতদেহও। শুক্রবার কাংপোকিতে সেই ১৯ জনের অন্তেষ্টি সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে চিন সীমান্ত লাগোয়া অরুণাচল প্রদেশে কোনরকম দখলদারির মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন লেফটানেন্ট জেনারেল কলিতা। তিনি বলেন, বাহিনী সেখানে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে এবং পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে।