এই মুহূর্তে জেলা

গ্রামেগঞ্জে খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে, হারিয়ে যাচ্ছে সুস্বাদু খেজুরের রস ও গুড়।

হুগলি, ১৬ ডিসেম্বর:- শীতের মৌসুম শুরু হতেই একসময় বাড়িতে তৈরি হতো খেজুরের রস কিংবা রসের পাটালি গুড় দিয়ে মজাদার পিঠে-পুলির আয়োজন। মিষ্টি গন্ধে সারা বাড়ি ম-ম করত।তবে তা এখন আর চোখে পড়ে না। বর্তমান প্রজন্ম দোকান থেকে কেনা পিঠে পুলি খেয়েই সন্তুষ্ট থাকে। এখন আর আগের মত খেজুরের রসও নেই, নেই সেই পিঠে পায়েসও। কারণ, বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। গ্রামের মাঠে আর মেঠোপথের ধারে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। যে হারে খেজুরগাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপণ করা হয় না। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও সুস্বাদু খেজুরের রস- গুড়। রস আহরণে গাছিদের কোমরে দড়ির সঙ্গে ঝুড়ি বেঁধে ধারালো দা দিয়ে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচাছোলা ও নলি বসানোর কাজ এখন আর দেখা যায় না।

সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হতো বিভিন্ন রকমের গুড়ের পাটালি ও নলেন গুড়। গাছিদের অনেকেই এই বিষয়ে আক্ষেপের সুরে জানিয়েছেন, আগে তাদের দারুণ কদর ছিল, মৌসুম শুরুর আগে হতেই কথাবার্তা পাকা হতো কার কটি খেজুর গাছ কাটতে হবে। কিন্তু, আগের মতো তেমন খেজুর গাছও নেই। আর গ্রামের লোকেরাও এখন আর কেউ ডাকে না। এখন গাছ যেমন কমে গেছে তেমনি কমে গেছে গাছির সংখ্যাও। তারা জানান, খেজুরের গাছ কমে যাওয়ায় তাদের চাহিদাও কমে গেছে। খেজুরের গুড় তৈরির এই শিল্পকে গাছিরা ধরে রাখলেও বছরের বাকি সময় অর্থ উপার্জনের জন্য অন্য পেশায় যুক্ত হতে হয় তাদের। খেজুর গাছ হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ ইট ভাটার জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার-সহ অন্যান্য কারণেও বেপরোয়া খেজুর গাছ কাটা। এছাড়া অনেক সময় ঘরবাড়ি নির্মাণ করার জন্য খেজুরের গাছ কেটে ফেলা হয়।এতে দিনে দিনে আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে খেজুরের গাছ। আর এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আর খেজুরের গুড়ের পুরনো সেই মিষ্টি স্বাদ গেলে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগেই বেশি করে খেজুর গাছ রোপণ করতে হবে।