হুগলি, ১৩ অক্টোবর:- ছিলেন সেবাইত হয়ে গেলেন জমিদার।তার পর থেকেই শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা।২২৯ বছর ধরে একই কাঠামোয় হচ্ছে পুজো। শূন্যে গুলি ছুড়ে সূচনা হয় পুজোর।বর্ধমান মহারাজার জনার্দন মন্দিরের সেবাইত থেকে জমিদারি রূপান্তরিত হল পাঠক পরিবার। বর্ধমান মহারাজা খুশি হয়ে হুগলির তাল চিনান গ্রামের জমিদার সত্ত্ব দেন পাঠকদের, দশ হাজার বিঘা খাস জমি নিয়ে শুরু হয় তাদের জমিদারী। কৃষ্ণকান্ত পাঠক হয়ে যান তাল চিনান গ্রামের জমিদার। এখান থেকেই শুরু পাঠক পরিবারের জমিদারি। ক্রমশ জমিদারি বাড়তে থাকে, শুধু তাল চিনান নয়, চাঁদপুর, মহেশপুর, হিরন্নবাটি মৌজার মালিক হয়ে যান কৃষ্ণকান্ত পাঠক। এই বছর ২২৯ বছরে পড়ল হুগলির পাঠক বাড়ির দুর্গাপুজো।একসময় সন্ধিপূজোর আগে শূন্যে গুলি ছুড়ে হতো সন্ধিপুজোর ক্ষণ। এখনো হয় লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুক ফাটিয়ে। বর্ধমানের রাজার বাড়ি জনার্দনের সেবা পুজো করেই জমিদারি পেয়েছেন।
তাই জনার্দন এই পাঠক পরিবারের কুল গুরু বা কুল দেবতা। জমিদারির পাশাপাশি জনার্দনের মন্দির তৈরি করে পাঠক পরিবার। এখনো বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। পশু বলি হয় না বলি হয় ফলের, সারা বছর পাঠকবারি শুনশান থাকলেও। পুজোর সময় পাঠক বাড়ীর খান ৩২ ঘর গমগম করে আত্মীয়- পরিজনে, বিরাট জমিদার বাড়ি দুর্গা দালান ১ কাঠামোয় বিরাজ করেন স্বয়ং দেবী দুর্গা। পরিবারের দাবি শুরুর দিন থেকে আজ পর্যন্ত। কাঠামো-তে কোন পরিবর্তন হয়নি। পুজোর চার দিনই পাঠক বাড়িতে চলে। জমিয়ে ভুরিভোজ। সপ্তমীতে বাড়ির সকল পরিবার। অষ্টমীতে গ্রামের সকল মহিলারা। এবং নবমীতে গ্রামের বর্গক্ষেত্ররা আসেন নিমন্ত্রণে। দশমীর দিনে সবার জন্য খোলা থাকে পাঠক বাড়ির দুয়ার থাকে লুচি বোঁদে আর সিদ্ধির ব্যবস্থা, এরপরে প্রতিমা বরণ সিঁদুর খেলা, তারপরে গ্রামের মানুষের কাঁধে ভর করে এগিয়ে চলে নিরঞ্জনের পথে দেবী দুর্গা। গোটা গ্রামের মধ্যে আগে বিসর্জন হয় পাঠক বাড়ির প্রতিমা।। তারপরে গোটা গ্রামের প্রতিমা বিসর্জন হবে। এটাই এই গ্রামের রীতি, আজও চলে আসছে সেই রীতি।