এই মুহূর্তে কলকাতা

সমুদ্রে নৌকো ও ট্রলার ডুবির ঘটনা আটকাতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রাজ্যের।


কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর:- রাজ্য সরকার মাঝ সমুদ্রে নৌকা ও ট্রলারডুবির ঘটনা আটকাতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষনা সংস্থা, ‘ইসরো’-র থেকে প্রযুক্তি সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গেছে ট্রলারে দুর্ঘটনা ঠেকাতে ইসরোর উদ্ভাবিত এই দ্বিপাক্ষিক যোগযোগ বা ‘টু ওয়ে কমিউনিকেশন’ প্রযুক্তি বিশেষ ভাবে কার্য্যকর। এর মাধ্যমে ট্রলারে বিশেষ ধরনের ডিভাইস বসানো হবে। যার দ্বারা মৎস্যজীবীরা ট্রলার থেকে লাগাতার উপকূলের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন। মাঝসমুদ্রে বিপদ বা দুর্ঘটনায় পড়লে ডিভাইসে লিখে অথবা ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে বিপদগ্রস্ত ট্রলারের চালকরা সহজেই বার্তা পাঠাতে পারবেন।

পাইলট প্রকল্প হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, শঙ্করপুর, পেটুয়াঘাট, শৌলা মৎস্যবন্দর ও মৎস্য আহরণ কেন্দ্রে ২০টি ট্রলারে প্রাথমিকভাবে এই ডিভাইস বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শংকরপুর সহ বেশ কিছু জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে কন্ট্রোলরুম। দিঘা মোহনায় ট্রলারের কর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবিরে এই বিষয়ে বিশদ প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বহু বছর ধরে মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বিভিন্ন কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রলারগুলি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাণে বেঁচে ফিরে আসতে পারলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণহানি ঘটে। এই কারণে অনেকদিন ধরে মৎস্যজীবী সম্প্রদায় থেকে নিরাপত্তার দাবি উঠছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই ইসরোর কাছ থেকে এই প্রযুক্তি আমদানি করা হয়েছে। মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, “এই নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইসরো-র শরণাপন্ন হয় রাজ্য মৎস্য দফতর। ইসরো এই ব্যাপারে আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে।

তারপর আমরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ দেব। মাছ ধরতে গিয়ে গভীর সমুদ্রে বিপদের সম্মুখীন হলে কী করবেন অনেক সময় স্থির করে উঠতে পারেন না ট্রলারের কর্মীরা। ফলে বাকি মৎস্যজীবীদেরও বিপদে পড়তে হয়।তার জন্যই এই প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্যোগী হওয়া। এই ডিভাইসের মাধ্যমে টু ওয়ে কমিউনিকেশন অর্থাৎ দু’তরফের মধ্যে যোগাযোগ এবং তথ্য আদানপ্রদান চলবে।”। আর এই খবর পেয়ে খুশি মৎস্যজীবীরা। এই বিষয়ে এক মৎস্যজীবী জানান, “উত্তাল সমুদ্রে একবার আটকে গেলে বাঁচার রাস্তা থাকে না। একমাত্র কপাল ভালো থাকলে বেঁচে ফেরা যায়। এতদিন প্রাণ হাতে নিয়ে মাছ ধরতে যেতাম। এবার বাঁচার আশা নিয়ে মাঝ সমুদ্রে যাব মাছ ধরতে”।