কলকাতা, ২১ আগস্ট:- রাজ্য সরকার ২০ জুনের বদলে পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে চায়। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুর নেতৃত্বে গঠিত পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি আজ বিধানসভায় বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী কাল থেকে শুরু হতে চলা বিধানসভার অধিবেশনে এই মর্মে একটি প্রস্তাব আনা হতে পারে বলে জানা গেছে। এব্যপারে প্রশ্ন করা হলে কমিটির চেয়ারম্যান সুগত বসু বলেন, তাঁরা সরকারের কাছে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। সরকারই এব্যপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। গত ২০ জুন বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করেছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশেই রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রতিষ্ঠা দিবস কবে হবে, সেই নিয়ে বিধানসভায় একটি কমিটি তৈরি হয়। কমিটির উপদেষ্টা হয়েছিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সুগত বসু। সদস্য ছিলেন ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা। অধ্যক্ষের ঘরে বৈঠকের পর পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন নিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর। এই নিয়ে এবার বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হতে পারে। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ দিবস বলে যে দিনটি ঘিরে এত আয়োজন, ১৯৪৭ সালের সেই ২০ জুন তৎকালীন অখণ্ড বাংলা বিভাজনের বিষযটি উত্থাপিত হলে, বঙ্গভঙ্গের পক্ষে বেশি ভোট পড়ে। ফলে দু’টুকরো হয়ে যায় বাংলা। তৈরি হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) এবং একটি অংশ ভারতে রয়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ নামে। এর পর ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা অর্জন করে ভারত। কিন্তু সেই স্বাধীনতা অর্জিত হয় পঞ্জাব এবং বাংলা বিভাজনের মাধ্যমে। আজও সেই যন্ত্রণাময় ইতিহাস কুরে কুরে খায় শিকড় বিচ্ছিন্ন মানুষদের। ইংরেজ চলে গেলেও, তাদের টেনে যাওয়া বিভাজনের ক্ষত রয়ে গিয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সিদ্ধান্তে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।