এই মুহূর্তে জেলা

হুগলি জেলা পরিষদের ১৩ নম্বর আসনে তিনজনকে পিছনে ফেলে নতুন মুখের উদয়।

হুগলি, ১৬ জুন:- চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া -১, ২ এবং দেনানন্দপুর তিনটি পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত এই ১৩ নম্বর আসন। গতবার এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী জয়া ঢালি। জয়া যে এ বার টিকিট পাচ্ছেন না, তা নির্বাচনের আগে থেকেই ওই এলাকার তৃণমূল শিবির আঁচ করতে পেরেছিল। অপরদিকে, পাশের ১৪ নম্বর আসনের দাবিদার হয়ে উঠছিলেন গত বার টিকিট না পাওয়া মৌসুমী ঘোষ। মৌসুমী ২০১৩ থেকে ১৮ সেই আসন থেকে জয়ী হয়ে স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন। কিন্তু গতবার সেই আসনে নতুন মুখ হিসেবে জয়ী হয়ে তৃণমূলের নিশেষ ঘোষ জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ পদে বসেন। মৌসুমীকে বাদ দেওয়ায় সে সময় তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। চলতি বোর্ডের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে মৌসুমীকে ফিরিয়ে আনার কথা দলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল। তাই জয়াকে ছেঁটে ১৩ নম্বরে নিশেষকে দাঁড় করিয়ে ১৪ নম্বর থেকে মৌসুমীকে ফিরিয়ে আনার কথা দলীয় স্তরে ভাবা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। অপরদিকে, ১৩ নম্বরে প্রথম দিনই মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ দাস। তিনি বলেছিলেন, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের কথায় মনোনয়ন দাখিল করেছেন। যদিও দিলীপের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন অসিত। এ দিকে, সকলকে পিছনে ফেলে বুধবার সেই ১৩ নম্বর আসনে তৃণমূলের প্রথম দফার তালিকায় নাম দেখা যায় বাঁশবাড়িয়া পুরসভার পুরপ্রধান অরিজিতা শীলের।

এরপরেই এই ব্লকে তৃণমূলের একাংশ আসনটি হেরে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কারণ ২০২১ সালে বাঁশবাড়িয়ার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগীকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছিল অরিজিতার স্বামী সত্যরঞ্জন শীল (সোনা)- এর বিরুদ্ধে। তৎকালীন পুরসভার প্রশাসক পদে থাকা অরিজিতাকে এরপর দল সরিয়ে দেয়। পাশাপাশি শীল দম্পতিকে দল বহিষ্কার করেছিল। কিন্তু সেই অরিজিতার নাম প্রকাশিত হওয়ায় তৃণমূলের একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল। সকলকে পিছনে ফেলে বৃহষ্পতিবার সেই আসনেই মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল আইনজীবী সেলের নেতা নির্মাল্য চক্রবর্তী। নির্মাল্য প্রায় দেড় দশক ধরে দল করছেন। এই প্রথমবার টিকিট পেয়ে তিনি খুশি হয়ে বলেন, এতজন হেভিওয়েটকে পিছনে ফেলে টিকিট পাব ভাবতেই পারিনি। দল আমার উপর ভরসা রেখেছে, এটাই অনেক। অন্যদিকে, প্রশাসন সূত্রের খবর অনুযায়ী অরিজিতা ওই টিকিট ধরে রাখতে সকালে হাজির হয়েছিলেন চুঁচুড়ায় সদর মহকুমা শাসক দফতরে। তিনি যে পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তা প্রমাণ করতে চাইছিলেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি বলে খবর। এরপরেই নির্মাল্য মনোনয়ন দাখিল করে দেয়। এ দিন অরিজিতাকে বারংবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাই প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ওই আসনে দল প্রথমে অরিজিতার নাম ঠিক করেছিল। পরে কিছু একটা বুঝে দলই পরিবর্তন করেছে। পুরোটাই রাজ্য কমিটির ব্যাপার। পাশাপাশি সেখান থেকে দিলীপ মনোনয়ন তুলে নেবেন বলে তিনি জানান।