হাওড়া, ৯ ফেব্রুয়ারি:- আপনার টাকা আদার ব্যাপারীদের কাছে চলে যাচ্ছে বলে এবার আদানি ইস্যুতে নাম না করে পাঁচলার সভা থেকে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা। এদিন তিনি বলেন, আপনার ব্যাঙ্ক এলআইসি’তে সঞ্চিত টাকা আদার ব্যাপারীদের কাছে চলে যাচ্ছে। এদিন পাঁচলার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বকেয়া প্রাপ্য টাকা না দেওয়ায় কেন্দ্রেরও কড়া সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়ার পাঁচলায় নেতাজি সংঘের মাঠ থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস এবং পরিষেবা প্রদান করেন। শুধু হাওড়া জেলাতেই নয়, পাশাপাশি ঝাড়গ্রাম, হুগলি, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান জেলারও বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করেন। হাওড়ার পাঁচলার পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মোট ১৫টি জেলার ৯০০ এর বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। শুধু হাওড়াতে জেলাতেই ৫৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৫২৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। এই জেলার ৬ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে হাওড়ার পাঁচলায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৯০০-র বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস হলো।
দুয়ারে সরকারে ৯ কোটি দরখাস্ত এসেছিল। তার মধ্যে ৭ কোটিরও বেশি মঞ্জুর হয়েছে। গেছে। আজ ৬ লক্ষ মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছবে পরিষেবা। কোনও জেলা যাতে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেই জন্যই এই ব্যবস্থা। বলাগড়ে পর্যটন কেন্দ্র, সাগর হাসপাতালে নতুন ক্যানসার ভবন, ২০৮টি পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস হয় এদিন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে রাজ্যের সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, বানতলায় চর্মশিল্পের নতুন ৩টি ইউনিট তৈরি হয়েছে। বানতলার চর্মশিল্পে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাওড়া জেলাকে আগে প্রাচ্যের ম্যাঞ্চেস্টার বলা হত। কিন্তু বাম আমলে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা আমাদের সচিবালয় হাওড়া জেলার মধ্যে এনেছি। আপনাদের এতে গর্বিত হওয়া উচিত। হাওড়ার ৯৫ শতাংশ মানুষকে কিছু না কিছু পরিষেবা আমরা দিয়েছি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পূর্ত দফতরের উদ্যোগে হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসয়ের উপর নবনির্মিত সেতু, সেতু সংলগ্ন ৪ লেনের রাস্তা এবং তৎসংলগ্ন রেলওয়ে আন্ডার পাসের শুভ সূচনা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাওড়ায় ড্রেনেজ ক্যানেলের ওপর কোন এক্সপ্রেসওয়েতে ৫০ মিটার দীর্ঘ এই সেতু এবং তৎসংলগ্ন ২ লেনের আন্ডার পাস নবনির্মিত হয়েছে। সেতুটি কলকাতাকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত করবে। ট্রাফিক জ্যামের জন্য সেতু সংলগ্ন ২ লেনের রাস্তাটি বর্ধিত করে ৪ লেন তৈরি করা হয়েছে। দু’দিকের রাস্তার ৩ কিলোমিটার সার্ভিস রোডও নির্মাণ করা হয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়া জেলার সাঁকরাইল ব্লকে এবং ডোমজুড়, পাঁচলা, উলুবেরিয়া ২ নম্বর ব্লকের কিছু অংশে ভূপৃষ্ঠস্থ জলভিত্তিক নলবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের শিলান্যাস ও শুভারম্ভ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এর পাশাপাশি হাওড়া জেলায় আরও ১৪টি ভূগর্ভস্থ জলভিত্তিক পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের শুভারম্ভ ও শিলান্যাস করা হলো। যার অনুমোদিত প্রকল্প ব্যয় ১৯৩ কোটি টাকা। এবং এর দ্বারা উপকৃত হবেন প্রায় ৬০ হাজার ২০০ জন।