সুদীপ দাস, ২১ ডিসেম্বর:- জীবিত মানুষকে মৃত বানিয়ে বীমা সংস্থার টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। এর জন্য সরকারি সমস্ত পরিচয় পত্র নকল করতে সিদ্ধহস্ত। বিষয়টি বোধগম্য হতেই ভারতীয় জীবন বীমা নিগম থানার দ্বারস্থ হয়। প্রায় বছর খানেক ধরে গা ঢাকা দেওয়ার পর এলআইসি-র এক এজেন্টের তৎপরতায় ওই প্রতারককে ধরে তুলে দেওয়া হল পুলিশের হাতে। ঘটনাটি চুঁচুড়া থানা এলাকার। চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা পেশায় এলআইসি এজেন্ট রাজু বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া ২০১৭ সাল নাগাদ ভাড়া ছিলেন জনৈক প্রদীপ চন্দ। প্রদীপবাবুই সাগর চক্রবর্তী নামে পরিচয় দিয়ে একজনকে রাজুর কাছে নিয়ে এসেছিলেন বীমা করাতে। সাগর জীবন বীমা করেন রাজুর কাছে। সেই বীমাতে নমিনি ছিলেন প্রদীপ চন্দ। প্রথমবারের প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার পর সাগরের সাথে আর কোনদিন যোগাযোগ হয়নি রাজুর।
মাসখানেক পর প্রদীপও অন্যত্র ভাড়া চলে যায়। এরপর প্রদীপ চুঁচুড়ার এলআইসি অফিসে সাগরের ডেথ সার্টিফিকেট টাকা ক্লেম করে। কিন্তু কাগজপত্র ঠিক নেই জানিয়ে এলআইসি অফিস সেই ক্লেম বাতিল করে দেয়। এরপর আইনজীবী মারফত পুনরায় সেই টাকা ক্লেম করে প্রদীপ। এলআইসি অফিসের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা চুঁচুড়া থানায় বিষয়টি জানায়। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে সাগর চক্রবর্তী নামে রবীন্দ্রনগরের আর এক বাসিন্দা জীবিত রয়েছেন। সাগরের বাবা পূর্বে রেলে কাটা পরে মারা যান। সাগর বাবার এলআইসি ক্লেমের জন্য একটা সময় প্রদীপের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেসময়ই সাগর নিজেদের সমস্ত নথিপত্র প্রদীপবাবুকে দিয়েছিলেন। প্রদীপ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেইসমস্ত কাগজপত্র এডিট করে ভুয়ো কাগজ বানিয়েছে। আজ হুগলী মোড় এলাকায় প্রদীপকে দেখতে পেয়েই ধরে ফেলে রাজু বিশ্বাস। তারপরই খবর দেওয়া হয় চুঁচুড়া থানায়। পুলিশ এসে প্রদীপকে আটক করে নিয়ে যায়। প্রদীপের সাথে আরও অনেকে যুক্ত কিনা সেবিষয়ে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।