এই মুহূর্তে জেলা

শীঘ্রই জিআই তকমা পেতে চলেছে বলাগড়ের নৌ-শিল্প।

হুগলি ৯ ডিসেম্বর:- খুব শীঘ্রই জিআই স্বীকৃতি পেতে চলেছে হুগলির বলাগড়ের নৌকো শিল্প। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ৩০০ বছর ধরে হুগলির এই বলাগড়ে নৌকো শিল্পকে কেন্দ্র করে বহু মানুষের জীবিকা নির্ভর করে আসছে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম ধীরে ধীরে এই নৌকো শিল্প থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ায় প্রাচীন এই শিল্প অস্তিত্ব সংকটে ভুগতে শুরু করেছে। বলাগড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই নৌকো তৈরীর শিল্পকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হোক। এরপরই বলাগড়ের বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক পার্থ চট্টোপাধ্যায় উদ্যোগী হন এবং গবেষণা করে এই নৌকো শিল্প সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপরই জি আই ট্যাগের জন্য আবেদন জানানো হয়। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে একটি গবেষক দল বলাগড়ের নৌকো শিল্প সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন ও বিভিন্ন সময়ে নৌ শিল্পাঞ্চল পরিদর্শনও করেন।

এবার সেই জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার গবেষক দলের প্রধান আইপিআর-এর চেয়ার প্রফেসর ডঃ পিনাক ঘোষ বলাগড়ের নৌ শিল্পাঞ্চল পরিদর্শন করেন এবং বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পায়েল পাল, বিডিও নীলাদ্রি সরকার, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও নৌ শিল্পীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পায়েল পাল বলেন তারা এখন জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। সোমবার বলাগড় নৌ সমিতির একটি বৈঠক আছে। ওই বৈঠকের পরই প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বৃহস্পতিবার বিডিও নীলাদ্রি সরকার, ডক্টর পিনাক ঘোষ, অধ্যাপক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ তিনি নৌ অঞ্চল পরিদর্শন করে সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ডক্টর পিনাক ঘোষ বলেন তারা বলাগড়ের এই নৌ শিল্পকে জি আই স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই বিষয়ে অধ্যাপক পার্থ চট্টোপাধ্যায় গবেষণা করে বিভিন্ন তথ্য তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। পার্থ বাবু বলেন বলাগড়ের ৩০০ বছরের প্রাচীন এই শিল্পের দিক থেকে এখানকার মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। তাই এই প্রাচীন শিল্প ক্রমশ ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এখানকার শিল্পের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো প্রাচীন পদ্ধতি মেনে এখানে যে ধরনের নৌকো তৈরি হয় বর্তমানে পৃথিবীতে কোথাও এই পদ্ধতি মেনে নৌকো তৈরি হয় না। এখানকার নৌ শিল্প জিআই স্বীকৃতি পেলে আন্তর্জাতিক বাজারের দরজা খুলে যাবে। নৌ শিল্পীরা জানান আর্থিক অনটনের কারণে তারা অনেকেই অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে এই শিল্পকে জিআই স্বীকৃতি দিলে তারা নতুন করে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।