এই মুহূর্তে কলকাতা

সরকার অনুমোদন দিলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই সেমেস্টার ভিত্তিক পঠন-পঠন চালু হবে।

কলকাতা, ১৬ নভেম্বর:- রাজ্য সরকার অনুমোদন দিলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই উচ্চমাধ্যমিক স্তরে সেমেস্টার ভিত্তিক পঠনপাঠন শুরু হতে চলেছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতেও মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর জুড়ে দিয়ে সেমেস্টার পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বাংলার সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকে একসঙ্গে জুড়ে দিতে চায় না। দুটি বোর্ড যেমন আলাদা ছিল, দুটি পরীক্ষা যেমন আলাদা ছিল, তাঁরা তেমনটাই রাখতে চান। তবে কেন্দ্রের সুপারিশ মতো উচ্চমাধ্যমিকের পঠনপাঠনের সেমেস্টার চালু করে দিতে চাইছে। কেননা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই রাজ্য সরকার সর্বভারতীয় বিভিন্ন বোর্ড এবং জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে এগতে চাইছে। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের তরফে যে জাতীয় শিক্ষানীতি গত বছর প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কিছুটা পরিমার্জন ও সংশোধন করেছে রাজ্য সরকারের শিক্ষাদফতর নিযুক্ত বিশেষ কমিটি। সেই সব সংশোধনী ইতিমধ্যেই খসড়া আকারে জমা পড়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। তাতেই পরীক্ষা পদ্ধতিতে বদল আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমে সেমেস্টার চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এই বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও প্রস্তুত রয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২০২৩ সালে একাদশ শ্রেণিতে ওঠা পড়ুয়ারা সেমেস্টার পদ্ধতিতেই পরীক্ষা দেবে। রাজ্য সরকারের গড়ে দেওয়া কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখিকা তথা শিক্ষাবিদ গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। ওই কমিটির জমা দেওয়া খসড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্কুলস্তরেই সেমেস্টার পদ্ধতির সঙ্গে পড়ুয়ারা পরিচিত হলে উচ্চশিক্ষায় তাঁদের মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে বলে মনে করেছে কমিটি। একই কারণে উচ্চ মাধ্যমিকে কিছু বিষয়ে ওএমআর শিটও চালু হতে পারে বলে সংসদ সূত্রে খবর। তবে এই সেমেস্টার পদ্ধতি চালু নিয়ে রাজ্যের শিক্ষাবিদ থেকে অভিভাবকদের মধ্যে বিরুদ্ধ মতও রয়েছে। তাঁদের দাবি, বাংলার বুকে বিস্তর ছুটিছাটার কারণে এমনিতেই সিলেবাস শেষ করতে সমস্যায় পড়ে স্কুলগুলি। তারওপর এখন সেমেস্টার পদ্ধতিতে ছ’মাস অন্তর পরীক্ষা হলে সিলেবাস শেষ করা আরও কঠিন হয়ে যাবে। পরীক্ষা গ্রহণ এবং তার প্রস্তুতিতেও সময় ব্যয় হবে। সেক্ষেত্রে হয় সিলেবাস কমাতে হবে, নয়তো ছুটি। সিলেবাস কমানোর পক্ষে নেই শিক্ষাবিদদের বড় অংশ। তাই নয়া পদ্ধতিতে ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এখানেই অভিভাবকদের উদ্বেগ ও আশঙ্কা লুকিয়ে রয়েছে।