এই মুহূর্তে কলকাতা

সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কাজ শুরু।

কলকাতা, ১২ নভেম্বর:- রাজ্য সরকার চলতি খরিফ মরসুমে ২ হাজার ৪০ টাকা কুইন্টাল প্রতি সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কাজ শুরু করেছে। এই জন্য প্রাথমিকভাবে রাজ্যজুড়ে ৪৬৯ টি স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এই কেন্দ্রগুলিতে সরাসরি ধান বিক্রি করলে কৃষকদের আরও অতিরিক্ত কুইন্টাল প্রতি কুড়ি টাকা করে উৎসাহ মূল্য দেওয়া হচ্ছে। একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। ধান বিক্রির জন্য খাদ্য সাথী- আমার রেশন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকরা নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এবার ফরেদের নিয়ন্ত্রণ করে সরাসরি সরকারের কাছে কৃষকদের ধান বিক্রিতে উৎসাহিত করতে একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে খাদ্য দফতর। এই বছরই প্রথম চাষি নিজে ঠিক করবেন তিনি কবে ধান বিক্রি করবেন সরকারের কাছে। অনলাইনেই নিজেদের পছন্দের সময় বেছে নিতে পারবেন তাঁরা। এতে চাষিদের হয়রানি অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রায় সারা বছরই নিয়মিত ব্যবধানে জেলায় জেলায় শিবির করে কৃষকদের থেকে সহায়ক মূল্যে ধান সংগ্রহ করে থাকে খাদ্য দফতর। নির্দিষ্ট দিনে কৃষকরা তাদের কাছাকাছি শিবিরে গিয়ে সরকারকে ধান বিক্রি করে থাকে। এবার এই নিয়মে কিছুটা বদল আনার কথা জানানো হয়েছে। খাদ্য দফতরের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, একজন কৃষক তার রেজিস্টার্ড মোবাইল থেকে খাদ্য দফতরের ওয়েব পোর্টাল www.procurement.wbfood.in এ গিয়ে তার জেলার তার বাড়ির কাছাকাছি এলাকার কোনো একটি ক্যাম্পে (তালিকাভুক্ত স্থায়ী ক্যাম্প হোক বা অস্থায়ী, অথবা মোবাইল ক্যাম্পে) পরবর্তী তিরিশ দিনের মধ্যে নিজের ইচ্ছে মত একটি দিন নিজেই ঠিক করে নিতে পারবেন। নির্দিষ্ট দিনে যদি তিনি ক্যাম্পে পৌঁছাতে না পারেন, তাতেও অসুবিধা নেই। নিজের ঠিক করা দিনের দশ দিন পর আবার নতুন দিন তিনি নিজেই বুক করতে পারবেন। প্রয়োজনে ধান বিক্রির নির্দিষ্ট দিনের তিন আগেও দিন পরিবর্তন করা যাবে এই অনলাইন পরিষেবার মাধ্যমে। এতদিন রাজ্য কৃষি দফতর বিভিন্ন জেলায় যে ধান সংগ্রাহক ক্যাম্প করতো, সেই ক্যাম্পে এসে কৃষকরা তাদের ধান বিক্রি করতো।

এক্ষেত্রে কৃষকরা তাদের বাড়ির কাছাকাছি ক্যাম্পে ধান বিক্রি করতো, কারণ সেক্ষেত্রে তাদের পরিবহন জনিত খরচ কম হতো। কিন্তু কোনো কারণে নির্দিষ্ট দিন মিস্ করে গেলে তাদেরকে হয়তো দূরবর্তী কোনো ক্যাম্পে যেতে হতো। এরফলে তাদের খরচ বেড়ে যেতো। অনেকে বর্ধিত খরচের ভয়ে আর দূরবর্তী কোনো ক্যাম্পে না গিয়ে এলাকার ফড়েদের কাছে অপেক্ষাকৃত কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হতো। এসব কথা মাথায় রেখে রাজ্য খাদ্য দফতর কৃষকদের সুবিধার্থে অনলাইন পরিষেবার সুযোগ নিয়ে এসেছে। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ধানের সহায়ক মূল্য ছিল কুইন্টাল পিছু ১৯৪০ টাকা। এ বছর তা ১০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২০৪০ টাকা। এর সঙ্গে মান্ডিতে ধান আনা বাবদ অতিরিক্ত ২০ টাকা করে দেওয়া হবে।