এই মুহূর্তে কলকাতা

প্রাইভেট টিউশন বন্ধে, ২০০ জন শিক্ষককে চিহ্নিত করে নোটিশ পাঠালো শিক্ষা দপ্তর।

কলকাতা, ২৬ আগস্ট:- শুধু হুঁশিয়ারী দিয়ে ক্ষান্ত নয়। রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সহায়তা প্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। প্রথম পর্যায়ে এধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ২০০ জন শিক্ষককে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে। ৪৫ টির বেশি স্কুলকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।প্রাইভেট টিউশনের সঙ্গে এই শিক্ষক শিক্ষিকারা যুক্ত কিনা তা লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ১৫ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে শিক্ষা দফরকে রিপোর্ট দিতে হবে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই শিক্ষক – শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশনের সঙ্গে যুক্ত হলে এবার তাদের বিরুদ্ধে চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শিক্ষা দফতর এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেয়। সব সরকারি স্কুল, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল, মডেল স্কুল এবং এনআইজিএসগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই নির্দেশিকার আওতায় পরবেন বলে জানানো হয়। এই নিয়মের অন্যথা হলে তার চাকরিও কেড়ে নেওয়া হতে পারে।পেনশনও আটকে যেতে পারে। এই নির্দেশ যাতে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হয় তার জন্য রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে নোটিস পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি, গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠন স্কুল শিক্ষা দফতরে প্রমাণ সহ ৬১জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় যে তাঁরা নিয়মলঙ্ঘণ করে প্রাইভেট টিউশানি করে চলেছেন। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরেই এই পদক্ষেপ। যানা গিয়েছে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বেলঘড়িয়া, দমদম, বরানগর-সহ একাধিক জায়গার স্কুলগুলিকে নোটিশ দিয়েছে রাজ্য। রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশানির রোগ দীর্ঘদিনের। আর তা নিয়ে গৃহশিক্ষকদের ক্ষোভও দীর্ঘদিনের। বাম জমানাতেই আইন করে সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশানি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু তারপরেও দেখা যায় ওই সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা চুটিয়ে প্রাইভেট টিউশানি করে চলেছেন।

কেউ নিজের বাড়িতে, কেউবা ভাড়া বাড়িতে। অনেকে আবার কোচিংয়ের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে গিয়েছেন। আগে রাজ্যের মডেলস্কুল ও এনআইজিএসগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই আইনের আওতায় ছিলেন না। কিন্তু রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই দুই ধরনের স্কুলগুলিকেও এই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। রাজ্যের তৈরি শিক্ষকদের আচরণ বিধিতে প্রাইভেট টিউশানি না করার কথা বলা আছে। শিক্ষার অধিকার আইনেও সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও প্রাইভেট টিউশন চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিরা। স্কুল শিক্ষা কমিশনার এই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছেন নিয়মের লঙ্ঘণ দেখলেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা ওই দোষী শিক্ষক বা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।