এই মুহূর্তে কলকাতা

প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য আজ থেকে শুরু হল পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি।

কলকাতা,৭ ফেব্রুয়ারি:- করোনা সংক্রমনের ভয় এড়িয়ে মুক্ত পরিবেশে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য সরকারের পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি সোমবার থেকে শুরু হয়েছে।যদিও লতা মঙ্গেশকরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্য সরকার এদিন অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করায় পাড়ায় শিক্ষালয় দশটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত।প্রথম দিনে সর্বত্র কোভিড বিধি মেনেই সর্বত্র পঠনপাঠন চলে। পড়ুয়াদের মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারে বিশেষ জোর দেওয়া হয়। মানা হয় শারীরিক দূরত্ববিধিও। পড়ুয়াদের‘পাড়ায় শিক্ষালয়ে’ রান্না করা খাবারও দেওয়া হবে বলে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে। ফের দু’বছর পর স্কুলের মেজাজ ফিরে পাওয়ায় খুশি কচিকাঁচারা। কলকাতায় প্রথম দিনে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল মিলিয়ে ৫০০’র বেশি পাড়ায় শিক্ষালয় শিবির আয়োজন করা হয়। শহরের বিভিন্ন পার্ক, খোলা মাঠ ও স্কুল চত্বরে বসে এই শিবির। তাতে উপস্থিত ছিল প্রাক প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেনীর পড়ুয়ারা। এদিন বেলার দিকে চেতলা অগ্রণীর মাঠে চেতলা বয়েজ স্কুলের ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ কর্মসূচি দেখতে হাজির হন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

সেখানে তিনি কথা বলেন পড়ুয়াদের সঙ্গে। বেশ কিছুক্ষন সময় সেখানে কাটান মেয়র। একই সঙ্গে এই কর্মসূচিতে রান্না করা মিড ডে মিল খাওয়ানোর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল।এদিন কলকাতায় যেসব ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ কর্মসূচির শিবির বসেছে সেই সব শিবিরকে বেলুন, ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় বেশ কিছু জায়গায়। কোথাও কোথাও আবার পড়ুয়াদের হাতে চকলেট, পেন, মাস্কও তুলে দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের গায়ে যাতে সরাসরি রোদ না পরে তার জন্য টাঙানো হয় শামিয়ানা বা ত্রিপল। মাটিতে বসার জন্য বিছোনো হয় ত্রিপল ও শতরঞ্জি। শৌচালয়ের জন্য বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা ছিল বেশিরভাগ জায়গায়। যেখানে বায়ো টয়লেট নেই না, সেখানে কাছাকাছির মধ্যে থাকা সুলভ শৌচালয়গুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই এদিন থেকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় ওই সব শৌচালয় স্যানিটাইজ করানো হয়েছে পুরসভার তরফে। এদিন পড়ুয়াদের হাতে হাতে প্যাকেট মিল দেওয়া হলেও আগামি দিনে তাঁরা রান্না করা মিড ডে মিল পাবেই বলে জানা গিয়েছে।

এদিনের মিলের প্যাকেটে থাকছে আলুর দম আর ফ্রায়েড রাইস। সোমবার ‘পাড়ার শিক্ষালয়’ কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘সব জায়গায় দেখলাম পড়ুয়ারা বেশ উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে ক্লাস করতে হাজির হয়েছে। ওরা বেশ খুশি এখানে এসে। অনেক নতুন বন্ধু পাচ্ছে। আগামী দিনে পরিস্থিতি যতদিন না ঠিক হচ্ছে, যতদিন না ক্লাসে পড়াশোনা চালু হচ্ছে ততদিন এভাবেই পাড়ায় শিক্ষালয় চলবে। এরকমভাবেই মাঠে আনন্দ করে ক্লাস হবে। এক একটা স্কুল এক-এক জায়গায় ক্লাস করবে। যেখানে পড়ুয়া বেশি, সেখানে ক্লাস হবে। শান্তিনিকেতনেও তো গাছের তলায় পড়াশোনা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুরু করে গিয়েছিলেন। প্রকৃতির মাঝখানে পড়াশোনা করার মতো আনন্দ আর কিছুতে নেই। এটার একটা আলাদা আনন্দ আছে, কিছুদিন উপভোগ করুক।’