সুদীপ দাস, ২৪ ডিসেম্বর:- সালটা ছিলো ১৬৯৫ খ্রীষ্টাব্দ। চুঁচুড়ার শেষ ডাচ গভর্নর ড্যানিয়েল অ্যান্টনী ওভারবেক এই চার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তৎকালীয় আর্মেনিটোলা আজ চুঁচুড়ার মোঘলটুলি এলাকা। ইতিহাস বলছে বাংলার প্রথম গীর্জা হুগলীর ব্যান্ডেল চার্চ। যা ১৫৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। আর বাংলার ২য় গীর্জাও হুগলীতেই প্রতিষ্ঠিত চুঁচুড়ার এই আর্মেনিয়ান চার্চ। একতল বিশিষ্ট এই গীর্জা চুঁচুড়া শহরে কয়েক বিঘা জমির উপর তৈরী।
তবে গীর্জার মূল টাওয়ার বিশিষ্ট ঘন্টা ঘরটি তৈরী হয় ১৮১৮ সালে। ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম থাকলেও এই গীর্জায় সাধারনের প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আশপাশের বহুতলে না উঠলে সুউচ্চ পাঁচিলবিশিষ্ট আর্মেনিয়ান চার্চের ভিতরের অংশ দেখার কোন সুযোগই নেই। চুঁচুড়ার ইতিহাসবিদ সপ্তর্ষি ব্যানার্জী বলেন এই চার্চে এখনও বর্তমান রয়েছে প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির একটি ছবি। পাশাপাশি এক আর্মেনিয়ান মহিলার কবর গোয়ালিয়ার থেকে এখানেই প্রথম স্থানান্তর করা হয়। সেদিক থেকে এই চার্চের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।
তবে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেই ইতিহাসের হাতছানিও পায়না আম জনতা। সপ্তর্ষিবাবু বলেন এই চার্চে ২৫শে ডিসেম্বর বড়দিন পালন হয়না। এখানে ৬ই জানু্য়ারি বড়দিন পালন হয়। কারন বাইবেলের মতে ৬ই ডিসেম্বর সেন্ট জন কর্তৃক ব্যাপটিজম (ধর্মীয় নিমজ্জন বা শুদ্ধিকরন) লাভ করেন যীশু খ্রীষ্ট। তাই সেই দিনকেই প্রভু যীশুর জন্মদিন ধরে নিয়ে বড়দিন পালন করে আর্মেনিয়ানরা।
সেই মতে চুঁচুড়ার আর্মেনিয়ান চার্চেও ওইদিন কোলকাতার আর্মেনিয়ান স্ট্রিট থেকে আর্মেনিয়ানরা এই গীর্জায় এসে প্রার্থনা করেন। তবে সেদিনও চুঁচুড়াবাসী কিংবা সাধারন মানুষের প্রবেশে অনুমতি মেলে না। ঐতিহাহিক গুরুত্বের কথা চিন্তা করে বহুদিন ধরেই তাই চুঁচুড়াবাসী এই চার্চে প্রবেশাধিকারের দাবী তুলে আসছেন। চার্চ কর্তৃপক্ষ সত্যিই একদিন সেই দাবী মেনে নেয় কিনা এখন সেটাই দেখার!