চিরঞ্জিত ঘোষ, ৬ ডিসেম্বর:- চলতি মাসের দু’তারিখ সিঙ্গুরের নান্দা এলাকায় সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে আত্মীয়র হাতে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় এখনও গ্রেফতার হয়নি মূল অভিযুক্ত। মাত্র চারদিনের মধ্যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো হুগলীর গ্রামীন জেলা পুলিশের চন্ডীতলা থানা এলাকায়। এবারে খুড়তোতো দাদা, বৌদি ও ভাইঝিকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠলো জ্যাঠতুতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে চন্ডীতলার নৈটি এলাকায়। মৃতেরা হলেন সঞ্জয় ঘোষ (৪৭), মিতালী ঘোষ(৩৮) এবং শিল্পা ঘোষ(১৬)। সঞ্জয় ও মিতালীর একমাত্র সন্তান শিল্পা একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো। সঞ্জয় সেলুনে ব্যাবহারের সামগ্রী বিক্রি করতেন। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ের জ্যেঠার ছেলে শ্রীকান্ত ঘোষ পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্রে সোনার কারীগর শ্রীকান্ত প্রায় ৭ মাস আগে কাজ ছেড়ে চন্ডীতলার বাড়িতে চলে আসে। সঞ্জয়-শ্রীকান্তরা পাশাপাশি বাড়িতেই থাকতেন। দুই তুতো পরিবারের মধ্যে জায়গা-জমি নিয়ে বিবাদ ছিলো দীর্ঘদিনের। একাধিকবার স্থানীয় পঞ্চায়েতের হস্তক্ষেপেও সেই বিবাদ মেটেনি বলে স্থানীয়দের দাবী। সপ্তাহ খানেক আগে শ্রীকান্ত একটি চপার কিনে নিয়ে আসে। এ-কদিন ধরে প্রায় রোজই সেই চপার বাড়ির কাছে ধার দিতো শ্রীকান্ত। কেউ দেখে নিলে বলতো যা ধার হয়েছে, মানুষ মারা যাবে। অভিযোগ সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ সঞ্জয় মুড়ি নিয়ে ঘড়ের ফেরার সময়ই সদর দরজার সামনেই সঞ্জয়কে চপার দিয়ে আঘাত করে শ্রীকান্ত। কোনরকমে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই বাড়ির উঠোনে সঞ্জয়ের উপর ঝাঁপিয়ে পরে শ্রীকান্ত। শ্রীকান্তের চপারের আঘাতে সেখানেই লুটিয়ে পরে সঞ্জয়।
চিৎকার শুনে বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসেন সঞ্জয়ের স্ত্রী মিতালী ও মেয়ে শিল্পা। মিতালীর গলা লক্ষ্য করে চপার চালায় সঞ্জয়। মিতালী দেবীও স্বামীর পাশে লুটিয়ে পরেন। শিল্পা কোনক্রমে পালিয়ে সদর দরজা টপকাতেই শিল্পার গলায় চপারের কোপ দেয় সঞ্জয়। শিল্পাও সেখানে লুটিয়ে পরে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিনজনের। ঘটনার পরই পালিয়ে যায় সঞ্জয়। খবর ছড়িয়ে পরতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রথমে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় চন্ডীতলা থানার পুলিশ। এরপর গ্রামীন পুলিশের আধিকারিকরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ক্ষিপ্ত জনতারা এদিন শ্রীকান্তর বাড়িতে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ শ্রীকান্তর দুই ভাই তপন ঘোষ ও সঞ্জিৎ ঘোষকে আটক করেছে পুলিশ। শ্রীকান্তর খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে।