এই মুহূর্তে জেলা

মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলনকে সামনে রেখে বলি প্রথা বন্ধ হয়েছিল হাওড়ার বোস বাড়ির দূর্গাপুজোয়।


হাওড়া , ৯ অক্টোবর:- মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলনকে সামনে রেখে বলি প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল হাওড়ার বসু পরিবারের দূর্গাপুজোয়। সেই নিয়ম আজও চলে আসছে। এখন পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। দেড়শ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে হাওড়ার শিবপুরের রামকৃষ্ণপুর লেনের এর বিখ্যাত বসু পরিবারের পুজো। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক তথা প্রয়াত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ নিমাই সাধন বসু এই পরিবারেরই সন্তান। এই পরিবারের পুজো সম্পর্কে পরিবারের সদস্য তথা পুজোর দায়িত্বে থাকা গৌতম সাধন বসু জানান, ১৮৪০ সালে শুরু হয় তাদের পরিবারের পুজো। এই পুজো তাঁদের সিংটি শিবপুর গ্রামে শুরু করেন ঈশান চন্দ্র বসু। কর্মসূত্রে তিনি কলকাতায় থাকতেন। পরে এই পরিবার হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর লেনে চলে এলে পুজো সেখানেই আরম্ভ হয়। মহাত্মা গান্ধী অহিংস আন্দোলনকে সমর্থন করে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাদের বাড়ির বলি প্রথা। তবে তখন ফল বলি চলত।

এখন কোনও বলিই আর হয় না। কি কারণে তাও বন্ধ হয়ে গেল তা জানা নেই। বৈষ্ণব মতে এ বাড়িতে পুজো হয়। এর আগে পুজোয় ছাগ বলি হত। এই পরিবারের দুর্গা প্রতিমা হয় একচালা। এই এখানে সিংহের রং সাদা। নবমীর দিন এখানে কুমারী পূজা হয়। এখানকার প্রতিমাশিল্পী বংশপরম্পরায় প্রতিমা নির্মাণ করে আসছেন। পুর্বপুরুষরা যখন হাওড়ায় আসেন তখন গ্রাম থেকে প্রতিমা শিল্পী, ধোপা, নাপিত, ঢাকি, পুরহিত এদের সকলকেই নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে তাদের শিবপুরের জায়গা দেওয়া হয়েছিল থাকার জন্য। জন্মাষ্টমীর পরেরদিন নন্দ উৎসবে গঙ্গা থেকে মাটি এনে কাঠামোতে স্পর্শ করে তৈরি হয় প্রতিমা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয় এদের। মহালয়ার দিন থেকে শুরু হয় পুজো। প্রতিমা তৈরি হয় একই কাঠামোর উপরে। পুজোয় দুর্গাকে লুচি ও বিভিন্ন ভাজা দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। বিসর্জনের দিন সেই কাঠামো তুলে নিয়ে আসা হয়। কাঁধে করে প্রতিমা নিয়ে গঙ্গায় বিসর্জন করা এই পরিবারের পুজোর বহু বছরের পুরনো রীতি। ১৭১ বছর ধরে এখনো তা বহন করে চলেছেন বসু পরিবারের সদস্যরা।