এই মুহূর্তে জেলা

বন্যার গ্রাসে প্রতিমা শিল্পীদের ঘরের পাশাপাশি তৈরি করা প্রতিমাও , আর্থিক সংকটের মুখে শিল্পীরা।

মহেশ্বর চক্রবর্তী, ৪ অক্টোবর:- বন্যার জল কমেছে কিন্তু ভয়াবহ চিহ্ন রেখে গেছে হুগলির আরামবাগ শহরে।বাড়ি ঘর দোকানপাঠ সব ধ্বংস হয়েছে বন্যার করাল গ্রাসে। এই করাল গ্রাস থেকে রেহাই পায়নি প্রতিমা শিল্পীরা।তাদের বাড়ি ঘরের পাশাপাশি মাটির তৈরি দুর্গা প্রতিমা সব বন্যার জলে নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে তারা। তাছাড়া হাতে গোনা কয়েক দিন পরেই দুর্গা পুজো। কিভাবে সেই পুজোয় ঠাকুর মন্ডপে মন্ডপে পৌঁছাবে সেই বিষয়ে চিন্তায় অস্থির তারা।নতুন করে ঠাকুর গড়া থেকে শুরু করে ঠাকুর শুকিয়ে রঙ করে তৈরি করতে একদিকে যেমন সময় লাগবে তেমনি খরচও হবে দ্বিগুন। সেই ব্যয়ভার যদি পুজো কমিটিগুলি না নেয় তাহলে ব্যপক আর্থিক সংকটে পড়বেন প্রতিমা শিল্পীরা।

কারন ঠাকুর তৈরি করার আগে পুজোকমিটি গুলি প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে নিদিষ্ট একটি চুক্তিপত্র করে নেয়। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দুর্গা ঠাকুর নতুন করে গড়তে গেলে খরচ বাড়বে। এই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে আরামবাগের পারুল এলাকার প্রতিমা শিল্পীদের। আরামবাগ শহরের পারুল এলাকায় প্রায় দশ থেকে বারোটি পরিবার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত। ২০২১ সালে হঠাৎ দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে পারুলসহ গোটা আরামবাগ শহর জলের তলায় চলে যায়। দুর্গা প্রতিমা থেকে লক্ষ্মী ও কালি ঠাকুরের প্রতিমা সব বন্যার জলে নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি এই সব শিল্পীদের বাড়িতে ও গোডাউনে এক কোমর করে জল জমে যায়। বাড়ির চারিদিক দিয়ে দ্বারকেশ্বর নদীর জল হু হু করে বইতে থাকে।

বর্তমানে জল কমে গেলেও ধ্বংসের চিত্র সর্বত্র দেখা যায়। কান্না ভেজা চোখে প্রতিমা শিল্পীদের দাবি, এত বড়ো বন্যা কখনও হয়নি। সব ধ্বংস করে দিলো। ছেলে মেয়েদের নিয়ে এই পুজোর সময় তারা কি করবে, ভেবে পাচ্ছেন তারা। এই বিষয়ে সীমন্ত রাম জানান, দশ থেকে বারোটি দুর্গা ঠাকুর আমি একাই তৈরি করেছিলাম। সব বন্যার জলে নষ্ট হয়ে গেছে। এক বুক জল হয়ে গিয়েছিলো। পুজো আর কয়েক দিন বাকী। চেষ্টা করছি কয়েকটি নতুন করে তৈরি করার। এই রখম বন্যা আমরা আগে দেখিনি। অপরদিকে ডলি বর্ধন নামে এক মহিলা প্রতিমা শিল্পী জানান, বান বান আসছে বলে শুনতে পেলাম। চোখের নিমিষে এক কোমর জল বাড়িতে। সব ঠাকুর জলের তলায়। নষ্ট হয়ে গেলো সব। কোথায় ঠাকুর রাখবো। এই ক্ষয়ক্ষতি পুরনে প্রশাসন যদি কিছু সাহায্য করে তাহলে আমরা বাঁচতে পারবো। সবমিলিয়ে বন্যার জেরে পুজোর সময় আর্থিক সংকটে প্রতিমা শিল্পীরা।