এই মুহূর্তে জেলা

এবার ভ্যাকসিন নিয়ে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন চিকিৎসকই।

হুগলি, ২৯ আগস্ট:- হুগলির পুড়শুড়ার ডিহিবাতপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। জানা গিয়েছে, কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে এবার বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন স্বয়ং দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক।আর এই ঘটনার জেড়ে প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ভ্যাকসিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা প্রশাসনের। দায়িত্ব প্রাপ্ত চিকিৎসক সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে জানান, দালাল চক্রের মাধ্যমে ভ্যাকসিন চলে যাচ্ছে অন্য জনের কাছে। অথচ প্রাপ্য মানুষজন লাইন দিয়েও ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না। ভ্যাকসিন নিয়ে একটা দালাল চক্র চলছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের একাংশ কর্মীরা যুক্ত এই দালাল চক্রে। লোকাল লোক ভ্যাকসিন পাচ্ছে না। বাইরে থেকে লোক এসে ভ্যাকসিন নিয়ে চলে যাচ্ছে। এই বিষয়ে পুড়শুড়ার বিডিও অচিন্ত্য ঘোষ বলেন, এরখম একটা অভিযোগ হয়েছে। জেলা এবং ব্লক স্তরেও একটা তদন্ত শুরু করা হচ্ছে। কেউ যদি ভ্যাকসিন দুর্নীতির যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষ সুত্রে জানা গিয়েছে,ওই দালাল চক্রের দুর্নীতির প্রতিবাদ করে হুমকির মুখে পড়েছেন সপরিবারে সেই সরকারি চিকিৎসক। দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চেয়ে ওই চিকিৎসক চিঠি লিখেছেন উচ্চ মহলে। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে যে দুর্নীতি হচ্ছে তার বিরুদ্ধে নাকি বারবার মুখ খুলেছিলেন প্রহ্লাদ হাইত নামে ওই চিকিৎসক। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষজন ভ্যাকসিনের জোগান থাকা সত্বেও তা পৌঁছচ্ছেন না মানুষের কাছে। উল্টে সপরিবারে হুমকির মুখে নাকি পড়েছেন পহ্লাববাবু। অবশেষে প্রবল চাপের মুখে শেষপর্যন্ত দায়িত্ব ছাড়তে চেয়ে প্রহ্লাববাবু মেল করেছেন বিএমওএইচকে। আর এতেই ডিহিবাতপুর এলাকায় হইচই শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ওই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ শুরু করেছেন গ্রামের মানুষজনও। তাঁদের দাবি, দালাল চক্রের বাড়বাড়ন্ত বন্ধ না করলে সাধারণ মানুষ ভ্যাকসিন পাবেন না। তবে এই বিষয়ে সরাসরি চিকিৎসক প্রহ্লাদ হাইতের সাথে বিকালে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমি আর মন্তব্য করবো না।যা বলার পুড়শুড়া বিএমওএইচ বলবেন।

তবে পুড়শুড়ায় বিএমওএইচ সুব্রত কুমার বাগ জানান, প্রহ্লাদবাবু জেলাপরিষদ থেকে কেলেপাড়া পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ছিলেন। করোনা পরিস্থিতির জন্য ওনাকে অস্থায়ী ভাবে ডিহিবাতপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। উনি করোনা ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে ছিলেন না। কেবল মাত্র ভ্যাকসিন নিয়ে যদি কেউ অসুস্থ হন তাদের দেখতেন। আমরা সরকারি ভাবে একটা নিদিষ্ট পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন দিই। ভ্যাকসিন দুর্নীতি নিয়ে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা অমুলক। তবুও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে লিখিত দিতে বলা হয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি করে বিষয়টা গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ওনাকে কেউ ভয় দেখায়নি। উনি নিজেই ভয় পাচ্ছেন। যদি দুর্নীতির কোনও বিষয় থাকে বা কেউ যুক্ত থাকেন তাহলে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি হবে। অপরদিকে হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বলেন, এটা এমন একটা বিষয়, কাউকেই ছাড়া হবে না। ইতিমধ্যে আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ব্যাপারটা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সবমিলিয়ে পুড়শুড়ায় ভ্যাকসিন দুর্নীতি নিয়ে এলাকার মানুষ সঠিক তদন্তের দাবীতে সরব হয়েছেন।