এই মুহূর্তে জেলা

স্বার্থ মিটতেই ঠাঁই রাস্তায় , মানকুন্ডুর জুলি পৌঁছল ব্যান্ডেলে !

সুদীপ দাস , ৩০ জুলাই:- ছিলো গত ২৭ তারিখ। সেদিন দুপুর থেকে হঠাতই পাড়ার নেড়িদের খপ্পরে পরে “জুলি”। জুলি হলো “গোল্ডেন রিট্রিভার”। অসুস্থ জুলিকে টেনে হিচরে নেড়িরা নিজেদের শিকার বানানোর প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। যা দেখে হুগলীর মানকুন্ডু পালপাড়ার বাসিন্দাদের চক্ষু চড়কগাছ। “গোল্ডেন রিট্রিভারে”র মত উন্নত জাতের সারমেয় তো ঘড়ে থাকার কথা। কিন্তু রাস্তায় এলো কি করে? পাড়ার লোকেরা যখন একথা ভাবছেন তখন সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ব্যান্ডেল দেবানন্দপুর বেনেপুকুরের বাসিন্দা অনুরুদ্ধ মন্ডলকে ফোন করেন পালপাড়ার এক তরুনী। অনুরুদ্ধ “ক্যুইক কন্ট্রোল” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী। যারা মূলতঃ অসুস্থ পশু-পাখি উদ্ধার ও বৃক্ষরোপনের উপরে কাজ করে।

তরুনীর ফোন পেয়ে অনিরুদ্ধ নিজের টিম নিয়ে পৌঁছয় মানকুন্ডুতে। সেখানে গিয়ে অসুস্থ গোল্ডেন রিট্রিভারটিকে উদ্ধার করে ব্যান্ডেলে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া নতুন পোষ্যের নাম দেওয়া হয় জুলি। সেসময় জুলি গুরুতর অসুস্থ। তাঁর কানে পোকা ধরে গেছে। নেড়িদের কামড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় দেখা যাচ্ছে। অনিরুদ্ধ সহ তাঁর টিম সেদিন থেকে নাওয়া-খাওয়া ভূলে পরম স্নেহে জুলির যত্ন নিতে ব্যাস্ত। বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে অনিরুদ্ধ জানতে পারে মাত্র আড়াই বছর বয়সী জুলিকে ইতিমধ্যে বেশকয়েকবার সন্তান প্রসবের জন্য ব্যাবহার করা হয়েছে। এবং ব্যাবহারের পর এভাবেই অসুস্থ মাকে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়। অনুরুদ্ধ শুনেছিলো এক শ্রেনীর দুষ্ট চক্র এভাবেই বিভিন্ন উন্নত প্রজাতির সারমেয়দের ব্যাবহার করে মুনাফা লাভ করে চলেছে।

কিন্তু হুগলী জেলাতেও যে সেরক মানুষ আছেন তা ভাবতেও পারেনি অনুরুদ্ধ। টানা কয়েকদিনের চিকিৎসায় ঝিমিয়ে পরা জুলি বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ, অনেকটাই চনমনে। জুলিদের মত এধরনের ঘটনা অন্য সারমেয়দের সাথে যাতে না ঘটে সেজন্য বহু পশুপ্রেমী সংগঠনই সচেতনতার পথে নেমেছে। ব্যান্ডেলের পশুপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিং-এর করজোড়ে আবেদন এধরনের পোষ্যরা ঘরেই থাকতে অভ্যস্ত। অর্থ উপার্জনের জন্য তাদের শরীরকে বারংবার ব্যাবহার ও সবশেষে অসুস্থ পোষ্যকে রাস্তায় ফেলে দেবেন না!