হাওড়া, ২১ মে:- রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার হাওড়ায়। বদ্ধ ঘরে মৃত স্বামী ও নিজের বোনের সঙ্গে প্রায় দু’দিন কাটালেন বছর ৬৫ এর এক বৃদ্ধা। স্বামী ও বোনের দেহ আগলে ঘরেই রইলেন তিনি। চ্যাটার্জিহাট থানার ওলাবিবিতলার ঘটনায় চাঞ্চল্য। দুর্গন্ধ ছড়াতেই প্রতিবেশীরা খবর দেয় পুলিশকে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। উদ্ধার করা হয়েছে ওই বৃদ্ধাকেও। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকা শোকস্তব্ধ। মৃতদের দেহে পচন ধরায় দুর্গন্ধ ছড়িয়েছিল এলাকায়। অতিষ্ট হয়ে প্রতিবেশীরাই শুক্রবার সকালে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজা, জানালা বন্ধ অবস্থায় থাকা মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। শুক্রবার সকালে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে মধ্য হাওড়ার ওলাবিবিতলা এলাকার পোস্ট অফিসের তিনতলায়। করোনার আবহে পাড়ার একটি বাড়ি থেকে দু’টি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার মানুষজনের মধ্যে। বাসিন্দাদের অনুমান, মৃত দু’জনেই করোনার আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। যদিও পুলিশের দাবি, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে বয়সজনিত কারণেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা হয়েছিল কিনা তদন্তের পরই জানা যাবে। পাশাপাশি বৃদ্ধর স্ত্রীর করোনা পরীক্ষা করে দেখা হবে তিনি করোনা আক্রান্ত কিনা।
ওলাবিবিতলা এলাকার ওই বাড়ির তিনতলায় দু’টি ঘরে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন নিশীথরঞ্জন মন্ডল (৭৫), তাঁর স্ত্রী পাপড়ি মন্ডল এবং পাপড়িদেবীর বোন অনিতা ঘোষ। নিশীথরঞ্জনবাবু হাওড়া পুরনিগমের পদস্থ আধিকারিক ছিলেন। পাপড়িদেবীর বোন বছর ষাটেকের অনিতাদেবীও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হওয়ায় শয্যাশায়ী ছিলেন। এদিন সকাল থেকেই এলাকায় প্রচন্ড দুর্গন্ধ পান এলাকার বাসিন্দারা। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে নিজেরাই স্থানীয় চ্যাটার্জিহাট থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে ওই বাড়িটির তিনতলা থেকে দেহ দু’টি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান দু’টি মৃতদেহ কম করেও দু’দিন বা তার বেশি সময় পড়েছিল। নিশীথরঞ্জনবাবুর ভাইঝি সাথী মন্ডল বলেন, কীভাবে ওনারা মারা গিয়েছেন বলতে পারবো না। শুনছি তিনদিন আগেই মারা গিয়েছেন। তবে দু’জন যখন একসঙ্গে মারা গিয়েছে তখন করোনাতেও মারা যেতে পারেন। জ্যাঠাইমার করোনা পরীক্ষা করলে তবেই জানা যাবে।