হাওড়া, ২৭ এপ্রিল:- করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় এবার হাওড়া আদালত সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। মঙ্গলবার হাওড়া জেলা আদালতের বার সংগঠন মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় বুধবার থেকে হাওড়া আদালতের কোনও আইনজীবী আদালতের কাজে অংশগ্রহণ করবেন না। আগামী ৭ মে পর্যন্ত আইনজীবীরা আদালতের সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিচারপদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত সকলের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বার সংগঠনের পক্ষ থেকে এদিন জানানো হয়।ক্রিমিন্যাল কোর্ট বার লাইব্রেরীর সভাপতি সমীর বসু রায়চৌধুরী বলেন,“সম্প্রতি হাওড়া আদালতের দু’জন তরুণ আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এর পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন আইনজীবী। হাওড়া আদালতে প্রতিদিনই বহু মানুষের সমাগম হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে এই ঘটনায় চিন্তিত হয়ে পড়েন আইনজীবীরা। এই সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় এবং তা যাতে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য ক্রিমিন্যাল কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, ক্রিমিন্যাল কোর্ট বার লাইব্রেরী এবং হাওড়া বার অ্যাসোসিয়েশন হাওড়া আদালতের এই তিন সংগঠনের সদস্যরা মিলে মঙ্গলবার এক বৈঠকে মিলিত হন।
সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বুধবার থেকে আদালতের কোনও আইনজীবী আদালতের কোনও কাজ করবেন না। এমনকি সিজেএম কোর্টেও কোনও আইনজীবী কাজ করবেন না। বর্তমানে ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে করোনার সংক্রমণ। কিভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় সেই নিয়ে চিন্তিত ছিল হাওড়া আদালতের সকল সংগঠন। বিচারপ্রার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিচার করে বিচার পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত সকল মানুষের স্বার্থে তিনটি বার সংগঠনের সর্বসম্মতিক্রমে আদালত বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবিলম্বে যাতে হাওড়া আদালতের সমস্ত কোর্ট যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করা যায় সেই ব্যাপারেও আবেদন জানানো হবে। প্রসঙ্গত, ১০ বিঘা জমির উপর হাওড়া আদালত রয়েছে। হাওড়া আদালতে আছে ৭টি সিভিল জাজ জুনিয়র ডিভিশন, ৩টি সিভিল জাজ সিনিয়র ডিভিশন, ৮টি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, ১টি মিউনিশিপ্যালেটি কোর্ট, ৫টি এডিজে, ৩টি সিভিল জজ সিনিয়র ডিভিসন, ৩টি ফাস্ট ট্রাক কোর্ট, ১টি সিজিএম এবং ১টি ডিস্ট্রিক্ট জাজের কোর্ট। আদালতে দেওয়ানী ও ফৌজদারি মিলিয়ে এখানে আছেন প্রায় ৩ হাজার আইনজীবী ও আদালত কর্মী। এছাড়াও প্রত্যেক দিন প্রায় কয়েক হাজার বিচারপ্রার্থী হাওড়া আদালতে আসেন। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের আনাগোনা হয় এই আদালতে। এতে করোনা ছড়ানোর সম্ভবনা বেশি থাকে। সেকথা বিচার করেই সাময়িক বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৮ মে আদালতে আইনিজীবীদের কাজ শুরু হওয়ার পর আবার বৈঠকে বসা হবে। তারপর পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।