পশ্চিম মেদিনীপুর , ১৫ মার্চ:- সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিক্রম চন্দ্র প্রধানের সমর্থনে দাঁতন বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত মোহনপুর ব্লক এর নীলদা এলাকায় এক প্রকাশ্য জনসভার আয়োজন করা হয়। ওই জন সভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দাঁতন কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিক্রম চন্দ্র প্রধান, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ পাত্র, তৃণমূল কংগ্রেসের মোহনপুর ব্লক এর সভাপতি মানিক মাইতি, দাঁতন এক নম্বর ব্লকের সভাপতি প্রতুল দাস সহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ওই প্রকাশ্য সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ শামিল হয়েছিলেন। সমাবেশ মঞ্চে গিয়ে বিজেপি ছেড়ে বহু মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। তাদের হাতে মঞ্চে উপস্থিত নেতৃত্ব তৃনমূলের পতাকা তুলে দেন।সমাবেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভাষণে বিজেপিও নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি তার ভাষণে বলেন যেভাবে গুজরাটে সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল স্টেডিয়াম এর নাম বদলে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের নাম করা হয়েছে। তা নিয়ে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠছে। এরা বাংলায় ক্ষমতায় এলে মেদিনীপুরের নাম পাল্টে মোদীনিপুর করবে। বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে খাল কেটে কুমির আনা। বহিরাগতদের নায়ক বসে রয়েছে মেদিনীপুরে। জনতা বাঁধুন জোট জোড়া ফুলে সব ভোট। ভাঙা পা নিয়ে লড়াই করবে মমতা। সারাদেশের প্রতিবাদী আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইভিএমের মাধ্যমে জবাব দিয়ে বহিরাগতদের বিদায় করুন। তিনি সভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন দশ কোটি মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।তাই সকল কে তিনি মমতার পাশে থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন যারা মা দুর্গাকে অপমান করেন তাদের মা-বোনেরা কোনদিনও ভোট দিবেন না। সেই সঙ্গে তিনি বলেন রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাংলার গরিব মানুষের সরকার। গরিব মানুষদের বিনা পয়সায় চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আর স্বাস্থ্য সাথীর মাধ্যমে বিনা পয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। যে বিজেপি নেতারা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ড নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। সেই বিজেপি নেতাদের পরিবারের, সাংসদদের পরিবারের লোকেরা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন গরুর দুধ থেকে সোনা তৈরি করবে দিলীপ ঘোষ। আর সেই সোনা দিয়ে সোনার বাংলা গড়বে অমিত শাহ। বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করতে চলেছে তা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দেখা যাচ্ছে। অমিত শাহ র সভায় লোক হচ্ছেনা, শুভেন্দু অধিকারীর সভায় লোক হচ্ছেনা, রাজিব ব্যানার্জি সভায় লোক হচ্ছেনা, জেপি নাড্ডার মত মানুষকে ঝাড়গ্রামে সভা বাতিল করে চলে যেতে হচ্ছে। তাই বাংলার মানুষ আগাম জানান দিচ্ছে তৃতীয়বার নবান্নে ক্ষমতায় আসবে হাওয়াই চটি।
তাই কোনভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে বিজেপি বাংলার ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবেনা কারণ। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে রয়েছে। তাই ভাঙ্গা পা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করবে। সে ঘরে বসে থাকবে না। সেই সঙ্গে তিনি বলেন আগামী ২ রা মে খেলা হবে খেলা হবে। তবে রাজনৈতিকভাবে সবুজ আবির এর ঝড় শুরু হবে। সারা বাংলা জুড়ে সবুজ আবির এর ঝড় শুরু হয়েছে। তাই আগামী ২৭ শে মার্চ প্রথম পর্বের নির্বাচন। এই নির্বাচনে জঙ্গলমহলের প্রতিটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন। তিনি বলেন দাঁতন বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিক্রম চন্দ্র প্রধানকে আপনারা ভোট দিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত করুন। তিনি আপনাদের পাশে থেকে মাথা নিচু করে উন্নয়নের কাজ করবেন। কারন আপনারা ভোট দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিক্রম প্রধানকে নয়। শুধু বিক্রম প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের পাশে রয়েছে। এ দিন যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর জনসভা প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ শামিল হয়েছেন তা দেখে তিনি খুব খুশি। নীলদার সভা শেষ করে হেলিকপ্টারে করে তিনি চন্দ্রকোনা রোডে এক নির্বাচনী জনসভায় যোগদান করেন। চন্দ্রকোনা রোডে শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শ্রীকান্ত মাহাতোর সমর্থনে ওই জনসভা হয়। ওই জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন শালবনি কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী শ্রীকান্ত মাহাতো। গড়বেতা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী উত্তরা সিংহ হাজরা, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রাজীব ঘোষও সেবাব্রত ঘোষ সহ আরো অনেকে। ওই সভায় তিনি বলেন জঙ্গলমহলের শান্তি উন্নয়নের কারিগর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই জঙ্গলমহলে শান্তি অব্যাহত রাখতে ও জঙ্গলমহলের উন্নয়নেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনারা শালবনি কেন্দ্রে শ্রীকান্ত মাহাতো কে এবং গড়বেতা কেন্দ্রে উত্তরা সিংহকে জোড়া ফুল প্রতীকে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের হাতকে শক্তিশালী করবেন।