কলকাতা , ২৫ ডিসেম্বর:- রেলমন্ত্রক প্রস্তাবিত নয়া টালা ব্রিজের নকশা অনুমোদন করেছে। ফলে আগামী দেড় বছরে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে ও ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে এই সেতু উদ্বোধন করে তা জনগনের জন্য খুলে দেওয়া যাবে বলে রাজ্য সরকার আশাবাদী। টালা ব্রিজ ভেঙে নতুন করে তা তৈরি করছে রাজ্য সরকার। রেলের অংশে এই প্রস্তাবিত ব্রিজের পিলার গড়তে চেয়ে নকশা পাঠিয়েছিল পূর্ত দফতর। পূর্ব রেলের তরফে তার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নয়া টালা সেতু হবে কেবল স্টেয়ড। তবে এখানেও সেতুর নীচে রেল লাইন থাকায় পুরনো টালা সেতু ভাঙতে রেলকে ইতিমধ্যেই ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে । তবে আগের চেয়ে নয়া সেতু হবে অনেক লম্বা ও চওড়া। আগেকার টালা ব্রিজ যা ১৯৬২ সালে চালু হয় তার ভার বহনের সক্ষমতা ছিল ১৫০ টন। কিন্তু ২৪ মিটার চওড়া ৬১০ মিটার লম্বা নতুন ব্রিজ হবে চার লেনের কেবল স্টেয়ড ব্রিজ যা ৩৮৫ টন পর্যন্ত ভার বহন করতে পারবে।
জানা গিয়েছে, নতুন টালা ব্রিজের দুদিকে পিলার থাকলেও সেতুর মূল অংশের নীচে যেখানে রেলের লাইন আছে সেখানে কোনও পিলার থাকবে না। এই অংশের দৈর্ঘ্য ২৪০ মিটার। সেতুর বাকি ১৮০ মিটার কিন্তু পিলারের ওপরেই থাকছে। পাইকপাড়া দিকে সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড হবে ১৯০ মিটার লম্বা ও চিৎপুরের দিকে অ্যাপ্রোচ রোড হবে ১৮৭ মিটার লম্বা। নতুন এই ব্রিজ তৈরিতে রাজ্য সরকারের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ পড়ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের প্রথম দিকেই এই সেতুর কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পর কলকাতার সব সেতুর সঙ্গে টালা ব্রিজেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষার পরে সেতু বিশেষজ্ঞরা মত দেন পুরাতন সেতু ভেঙে ফেলার। ২০১৯ সালে পুজোর আগে থেকেই এই সেতুতে যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা শুরু হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় এই সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে টালা ব্রিজে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর শুরু হয় তা ভাঙার কাজ। মাঝে লকডাউনের জেরে বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু পরে আবার সেই কাজ শুরু হয়।
এখন নতুন সেতু তৈরির কাজ পুরো দমে শুরু করে হয়ে গিয়েছে। চলছে পিলার পাইলিংয়ের কাজ। সেতুর নীচ দিয়ে বেশ কিছু পাইপলাইন গিয়েছে। তার মধ্যে যেমন রয়েছে গ্যাসের পাইপলাইন তেমনি রয়েছে কেবল ও টেলিফোন লাইনও। এই সব সরিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সেতু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নতুন করে টালা সেতু নির্মাণের সময়ে আইআরসি-এর নির্দেশিকা মেনে সাঁজোয়া গাড়ির ভারবহন ক্ষমতাসম্পন্ন সেতু তৈরি করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। নয়া সেতুর নকশার মূল লক্ষ্য, অন্তত ১০০ বছরের জন্য এই সেতুর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা। আর তাই ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেসের (আইআরসি) সংশোধিত ‘কোড’ অনুযায়ী যাতে নতুন টালা সেতু যুদ্ধের সাঁজোয়া গাড়ি বা ট্যাঙ্কারের ভারও বহন করতে পারে, সেই উপযোগী নকশা বানানো হয়েছিল। এদিন সেই নকশাকেই রেলমন্ত্রক ছাড়পত্র দিয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল