এই মুহূর্তে জেলা

ক্ষীরাই বাংলার ফুলের উপত্যকা।

পশ্চিম মেদিনীপুর , ১৭ নভেম্বরে:- হাওড়া থেকে খড়গপুর বা মেদিনীপুর গামী ট্রেন ধরে পাঁশকুড়ার পরের স্টেশন ক্ষীরাই। সময় লাগে ১ ঘন্টা ৫০ মিনিট মতন। ক্ষীরাই স্টেশনে নেমে তিন নম্বর লাইন ধরে বরাবর পাঁশকুরার দিকে প্রায় ২০ মিনিট মতন হেঁটে সরু মাটির রাস্তা বরাবর কিছুদূর যাওয়ার পর পড়বে কসাই নদীর দুদিকেই ফুলের চাষ। ক্ষীরাই আসলে একটি নদীর নাম আর সেই নদীর নামেই গ্রামের নামকরণ। এখানে সবটাই যেন এক আঁকা ছবির মতন রঙীন ও সুন্দর। নাহঃ এখানে নাই কোনো পাহাড়ি উপত্যকা, নাই কোনো তুষার ধবলিত অঞ্চল বা নিবিড় বনানি। তবে আছে এই বাংলার নির্ভেজাল স্বাদ, আছে বাংলার নদী-ঘর-মাঠ-মানুষ নিয়ে ভরা প্রকৃত ‘বাংলার মুখ’।

তবে সবকিছুর মাঝেও যা সবাইকে বারবার ক্ষীরাইয়ের দিকে ছুটে নিয়ে যায়, তা হলোহাজারো ফুলের প্রাণ খোলা হাসির সমাহার। বাংলার ফুলের উপত্যকা- ক্ষীরাই। দুগ্গাপুজোর আগে পরেই কাঁসাই ও ক্ষীরাই নদীর ডান ও বামদিকের মাইলের পর মাইল ক্ষেত জুড়ে বসানো হয় চারাগাছ, যা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ অবধি নানা রঙের গালিচায় ভরে ওঠে নানা ফুলের গল্প নিয়ে। কি নাই সেখানে ? গাঁদ, গোলাও, আষ্টার, চন্দ্রমল্লিকা, মোরগঝুঁটি এবং আরো কত নাম না জানা ফুল। মাঠের পরে মাঠ ফুলের গালিচায় ঢাকা। ফুলের ক্ষেতে ব্যস্ত চাষিরা পরিচর্যায়।

ফুল তো অবশ্যই প্রধান আকর্ষণ, তাছাড়া আছে নানা পাখি প্রজাপতি ফড়িং আর পোকামাকড়। সবটা মিলিয়ে বলা যেতে পারে এই সময় প্রকৃতি তার রূপ-রস -গন্ধে ভরিয়ে রাখে এই ক্ষীরাই উপত্যকা। তবে আমরা মানুষেরা হয়ত ভালো কিছু টিকিয়ে রাখতে পারিনা! তাই এই যায়গাটির প্রতি ভ্রমনপিপাসু মানুষ জনের কিছু অবহেলা চোখে পড়ার মতন। গাছ থেকে ফুল ছেড়া, গাছের ডাল-পালা ধরে ছবি তোলা, সর্বোপরিভাবে সুন্দর এলাকাগুলোতে মাইক-প্যাকেট-খাওয়ার দ্রব্যের অনধিকৃত ব্যবহারে বনভোজন ইত্যাদি ফুলের গালিচায় মানুষের নির্মমতার প্রতীকী। তাই এগুলো দূরে রাখলে জায়গাটা বর্তমানে এবং ভবিষ্যতেও তার বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে সক্ষম হবে।