কলকাতা , ১৩ অক্টোবর:- করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সব ধরনের স্বাস্থ্যসুরক্ষা বিধি মেনে কলকাতা লন্ডন রুটে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এই দিন ফের কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক কে চিঠি পাঠাতে চলেছে রাজ্য । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার নবান্নে এক অনুষ্ঠানে দুই শহরের মধ্যে সরাসরি বিমান চালানোর আর্জি জানিয়ে তিনি মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্রায় এক দশক বন্ধ থাকার পর গত ১৭ই সেপ্টেম্বর কলকাতা লন্ডন রুটে বিমান পরিষেবা চালু হলেও দমদম বা হিথরো বিমানবন্দর থেকে পর্যাপ্ত যাত্রী না মেলায় তা দিল্লি হয়ে ঘুরে আসছিল। পরবর্তী সময়ে বিমানটি মুম্বাই হয়ে ঘুরে আসে। ফলে কলকাতা পৌছাতে প্রচুর সময় বেশি লাগছিল।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘আমরা চাই কলকাতা–লন্ডন বিমান পরিষেবা আরও বাড়ানো হোক এবং এটি স্থায়ী হোক। প্রাক্তন মুখ্যসচিব ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকে এ সংক্রান্ত আবেদন জানিয়েছেন। আমি বর্তমান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বলেছি ফের আবেদন জানাতে। তবে কলকাতা–লন্ডন অর্থাৎ কলকাতা–ইউরোপ বিমানযাত্রা তুলে নেওয়া যাবে না। আমরা চাই সরাসরি এই বিমান পরিষেবা চালু থাকুক। প্রয়োজন পড়লে কিছু সুবিধাও দেওয়া হবে।’
২০০৫ সালে সরাসরি কলকাতা–লন্ডন বিমান পরিষেবা প্রথম চালু করে এয়ার ইন্ডিয়া। ২০০৮–এর সেপ্টেম্বরে অনিবার্য কারণবশত তা বাতিল করে দেওয়া হয়। ২০০৯–এর মার্চে সরে দাঁড়ায় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজও। এক দশক পর কেন্দ্রের বন্দে ভারত মিশনের অন্তর্গত লন্ডন থেকে কলকাতা ফের সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন লন্ডন থেকে কলকাতায় আসেন ১৭ জন।বন্দে ভারত মিশনে এই পরিষেবা চালু থাকবে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত। আপাতত লন্ডন থেকে কলকাতায় এই বিমান আসছে প্রতি সপ্তাহের বুধবার ও শনিবার। এবং কলকাতা থেকে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে যাচ্ছে প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি ও রবিবার। সপ্তাহে মাত্র দু’দিন কলকাতা–লন্ডন বিমান যথেষ্ট নয় বলে এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘কলকাতা উত্তর–পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার, কলকাতার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, বিহারের। তাই কলকাতা থেকে লন্ডন তথা ইউরোপে যাওয়ার যাত্রীদের বেশ ভালই চাপ থাকে।’
এদিকে, ইউরোপ থেকে যে সব যাত্রী কলকাতায় ফিরতে চাইছেন তাঁরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওখানে কোভিড পরীক্ষা করানোর পর তা নেগেটিভ এলে বিমানে চড়ার অনুমতি দিচ্ছে প্রশাসন। এতে সময় অনেকটা বেশি লাগছে। কিছু সমস্যা হচ্ছে। আর তার জেরে বিমানে জায়গা থাকলেও অনেকে সেই পরিষেবা নিতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি আরও সহজতর করতে আমরা এখানে র্যাপিড কোভিড টেস্টের ব্যবস্থা করতে পারি। লন্ডন থেকে ভাল করে স্যানিটাইজড হয়ে কলকাতায় যাত্রীরা আসুক। এখানে যদি করোনা পরীক্ষায় কারও পজিটিভ রিপোর্ট আসে তবে প্রটোকল অনুযায়ী তাঁদের সেফ হোম বা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’