এই মুহূর্তে জেলা

ঈদে হারানো বৃদ্ধা উদ্ধার আগমনী র মাসে , পুজোর আগেই মা এলো ডানকুনিতে।

চিরঞ্জিত ঘোষ , ৭ অক্টোবর:- আগস্টের এক বকরিদের দিন বৃদ্ধা মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাতাসে আগমনীর বার্তা বইয়ে আসার সাথে সাথে হারানো মাকে খুঁজে পেলেন ছেলে। বুধবার সন্ধ্যায় বি গার্ডেন পুলিশ লাইনের কাছে মা ও ছেলে এই মিলন দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকলেন অনেকেই। করোনা পরিস্থিতিতে জীবনের অনেক কিছুই বদলে গেলেও মাকে ফিরে পাওয়া আনন্দই আলাদা। মাকে ফিরে পেয়ে এখন ডানকুনির শেখ কালোর পরিবারে খুশির জোয়ার আর তার মাকে ফিরে পেতে এই কাজে সর্বতোভাবে সাহায্য করেছে হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও। শেখ কালো ডানকুনির সুভাষপল্লী এলাকার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে শেখ কালো ডানকুনি রেল ইয়ার্ড শ্রমিক। কালো জানায় প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুপুরের মধ্যে মা বাড়ি ফিরে আসতেন। কিন্তু বকরি ঈদের দিন মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেন নি।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর মাকে খুঁজে না পেয়ে ডানকুনি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। বৃদ্ধা মা খুকি বিবি পথ হারিয়ে ঘুরতে ঘুরতে হাওড়া বি গার্ডেন এর কাছাকাছি চলে যান। সেখানেই বি গার্ডেন পুলিশ লাইনে কাছে একটি রাস্তার ধারে দিন পনেরো আগে আগে আশ্রয় নেন বৃদ্ধা। এলাকারই এক স্কুল শিক্ষিকার নজরে পড়েন ওই বৃদ্ধা। শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা মল্লিক কোভিডকে উপেক্ষা করে অত্যন্ত সহানুভূতি ও ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দেন। বৃদ্ধার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু বৃদ্ধা শুধু কালো নামটি ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেন নি। আসলে কালো হল বৃদ্ধার ছেলের নাম। কিন্তু ওই শিক্ষিকা গত পনের দিন ধরে দুই বেলা তার মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন।

এর পাশাপাশি হ্যাম রেডিও ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিওর সেক্রেটারি অম্বরিশ নাগ বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনার কথা বলেন। অম্বরিশ বাবু ঐ বৃদ্ধার ছবি তুলে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান। বৃদ্ধার ছবি দেখে ডানকুনি স্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা চিনতে পারেন। কিন্তু কোথায় তার বাড়ি সেটা তারা বলতে পারেন না। এরপর অম্বরিশ বাবু শ্রীরামপুরের এক প্রশাসনিক আধিকারিক এর সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি এ বিষয়ে ডানকুনির পুর প্রশাসকের সাথে কথা বলতে বলেন। এরপরই খোঁজ মেলে ঐ বৃদ্ধার ছেলে শেখ কালোর। ছেলের সাথে ফোনে মায়ের কথাও হয়। ফোনে মায়ের গলা শুনে রীতিমতো আপ্লুত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ছেলে ছুটে যান হাওড়ার বি গার্ডেন এলাকায়। তারপরই মা ছেলের সেই মিলন দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকলেন এলাকাবাসী।