তরুণ মুখোপাধ্যায়, ৫ জুন:- ৬২৪ বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক মাহেশের জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা এবছর মন্দির প্রাঙ্গণে হল। বর্তমানে করোনার করালগ্রাসে সারাবিশ্ব থরহরিকম্প এর থেকে বাদ পড়েনি আমাদের দেশেও । কঠোরভাবে মেনে চলা হচ্ছে লকডাউন বিধি। এর আওতায় থেকে বাদ যায়নি দেবালয় গুলিও। পুরীর পরে সারা দেশের মতো দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় পশ্চিম বাংলার হুগলির মাহেশে ।প্রতিবছর স্নানযাত্রা এবং রথযাত্রা উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমন ঘটে মাহেশ ধামে কিন্তু এবছর মারণব্যাধি ফলে সরকারের কঠোর নির্দেশ প্রকাশ্য স্থানে কোন জনসমাগম করে অনুষ্ঠান করা যাবে না । যার জন্য এ বছর মাহেশ জগন্নাথ দেব ট্রাস্টি বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্নানযাত্রা এবং রথযাত্রা এই দুটি অনুষ্ঠানে মন্দিরের ভিতরের হবে। সেই মতো আজ দুপুরে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের শুভ স্নানযাত্রা সম্পন্ন হল। জগন্নাথ দেবের প্রধান সেবাই সৌমেন অধিকারী পিয়াল অধিকারী স্থানীয় পুর সদস্য অসীম পন্ডিত সহ গুটিকয়েক ভক্তগণের উপস্থিতিতে এই স্নান পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। দেড়মণ দুধ এবং ঘোড়া ঘোড়া গঙ্গাজল দিয়ে ভগবান জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার স্নান পর্ব চলে ।
শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেব ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান ৬২৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম জগন্নাথ দেবের স্নানপর্ব স্নান মন্দির না হয়ে মূল মন্দিরে হল। যা হয়তো ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে। আজ জগন্নাথ দেবের স্নানএর পর কাল থেকে প্রভুর জ্বর আসবে এবং তাকে লেপ কম্বল দিয়ে মুড়ে শুইয়ে দেওয়া হবে ।এবং মন্দিরের দ্বার বন্ধ করে চলবে তার চিকিৎসা পর্ব ।নুতন করে অঙ্গরাগ করা হবে ।তারপরই এই মন্দির প্রাঙ্গণে অস্থায়ী মাসির বাড়ি করে আগামী ২৩ জুন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে ,এবং ৮ দিনের মাথায় উল্টো রথের দিন মহাপ্রভুকে মন্দিরের মূল বেদিতে ফিরিয়ে আনা হবে । এই ভয়াবহ মরণব্যাধির ফলে মন্দির প্রাঙ্গণের মধ্যেই সমস্ত অনুষ্ঠান গুলি করতে হচ্ছে। প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না সরকারের কঠোর নিয়ম নির্দেশ ফলে। আমরা লক্ষ লক্ষ ভক্তকূলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এবং আমরা আশাবাদী আগামী বছর গুলিতে প্রভু আমাদের মরণব্যাধি থেকে রক্ষা করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেবেন এবং আমরা আবার স্নানযাত্রা ও রথযাত্রার মতন ঐতিহাসিক উৎসব গুলি ধুমধামের সঙ্গে ভক্তগনের উপস্থিতিতে পালন করতে পারব।