নবান্ন,হাওড়া,২৭ এপ্রিল:- করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশে লকডাউন এর মেয়াদ বেশ কিছুদিন বাড়তে পারে বলে ধরে নিয়ে রাজ্য সরকার প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ একথা জানিয়েছেন। নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন ওই বৈঠকের লকডাউন এর মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে কোন আলোচনা না হলেও এই অবস্থা এখন চলতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রীর শরীরী ভাষা দেখে তার মনে হয়েছে। রাজ্য সরকারও ২১ শে মে পর্যন্ত সব রকমের সাবধানতা অবলম্বনের পক্ষপাতী। একারণে সংক্রমণের নিরিখে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকাকে রেড,অরেঞ্জ এবং গ্রীন জোন এ ভাগ করে আলাদা আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজ্যে সংক্রমণের নিরিখে কোন এলাকাগুলি কোন অবস্থানে আছে মুখ্যমন্ত্রী আজ তার তালিকা প্রকাশ্যে এনেছেন। তিনি জানান তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে সংক্রমণ মুক্ত থাকা এলাকা বা গ্রীন জোন গুলিতে লকডাউন বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। কিছুটা বিপদমুক্ত বা অরেঞ্জ জোন গুলিতে লকডাউন এ কিছুটা ছাড় দেওয়া হবে। তবে সংক্রমণের নিরিখে এখন সবথেকে শীর্ষে থাকা জায়গা বা রেড জোন গুলিতে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হবে।
সেখানকার বাসিন্দাদের একেবারেই বাড়ি থেকে না বের হতে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। প্রশাসন তাদের খাবার দাবার এবং অন্যান্য আবশ্যকীয় পণ্যের জোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।সাত দিন অন্তর অন্তর অবস্থা পর্যালোচনা করে ওইসব এলাকার চরিত্র পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২১ শে মে পর্যন্ত রাজ্যে এই ব্যবস্থায় চলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তবে লকডাউন শিথিল করা হলেও আন্তর্জাতিক সীমান্ত , অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক বিমান যোগাযোগ ,দূরপাল্লার ট্রেন, আন্তঃরাজ্য বাস চলাচল এখন বন্ধ রাখার পক্ষেই মুখ্যমন্ত্রী সওয়াল করেছেন। রাজ্যে করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি অন্য প্রশাসনিক কাজ যাতে শুরু করা যায় সে বিষয়ে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হচ্ছে বলে তিনি জানান। করোনা পরিস্থিতি ওপর নজরদারি চালানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী একটি বিশেষ মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরীর কথা ঘোষণা করেছেন। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় , ফিরহাদ হাকিম এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থাকছেন। এছাড়া মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব ওই কমিটিতে থাকবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।পাশাপাশি রাজ্যে এবার থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের পাশাপাশি অন্যান্য সামগ্রীর হোম ডেলিভারি শুরু করা হবে বলে তিনি এ দিন ঘোষণা করেন।কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের এক মাসে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি। এমনকি রাজ্যের বকেয়া টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এর ফলে রাজ্য সরকার চরম সংকটে পড়ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।