প্রদীপ সাঁতরা,১৪ এপ্রিল:- খাতায়-কলমে বাঙালি জীবনে আজ পয়লা বৈশাখ। পুরনো পঞ্জিকার শেষ পাতা তাই বলে গেল। নতুন পঞ্জিকা কি সেভাবে দেখা হয়েছে বাঙালির ? পঞ্জিকা পুঁথির কথা এখন আর ভেবে কী লাভ! গোটা দেশ এখন শুনশান লক ডাউন এ। পৃথিবী সহ সারা বাংলার একই চিত্র৷ আজ, মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখ। বাঙালির জীবনে হালখাতা, চৈত্রের চড়ক মেলা, নতুন পোশাক, দুপুরে রাতে রকমারি আহারের আসর সব চলে গেছে ভয়ংকর করোনার গ্রাসে। পয়লা বৈশাখের দিন বাঙালি মাস্ক পরে কবে কাটিয়েছে, সেটা খুঁজে বের করতে পাড়ার ঈশ্বর কোনো দাদুর খোঁজ পড়তে পারে !
যদিও অদম্য বাঙালি এই করোনা রোগের রাহুগ্রাস থেকে আজ বেরিয়ে পড়েছে ৷
আজ পয়লা বৈশাখ থেকেই একটু একটু করে সেই ‘স্বাধীনতা’র জন্য দিন গোনা শুরু করেছে। আজ নতুন মাস্কেই অনলাইনে বর্ষবরণ, হ্যাঁ বাঙালি আজও হারেনি !পয়লা বৈশাখ পালন করেছে । আজ যার যার বাড়িতে, সীমিত আয়োজনের মধ্যেই নববর্ষ পালনের তোড়জোড় ছিল। পুরোহিত আসতে পারবেন না। কোথাও কোথাও ভিডিও কলে তিনি মন্ত্র পড়ে দিয়েছেন। কোথাও বা পরিবারের বর্ষীয়ান সদস্যই পুজো সেরেছেন।
হেঁশেল সামলেছেন গোটা বাড়ির লোক। এখন তো রান্নার দিদি, মাসিরাও আসছেন না। মাইকে পুলিশ বার বার ঘোষণা করেছে, জরুরি জিনিসের দোকান ছাড়া আর কোনও দোকান খোলা যাবে না। মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোনোও যাবে না। এ গেল প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা। সব বাড়িতেই এখন নিষেধাজ্ঞার ঘেরাটোপ। মিনিটে মিনিটে স্যানিটাইজার আর কোভিড–১৯ ট্র্যাকারে চোখ রেখে নববর্ষ বরণ। বাঙালি পারেও বটে!
আজ পয়লা বৈশাখ। শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু হয়েছে সোমবার রাত থেকেই। আজ অবশ্য দেখা যায়নি দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, বেলুড় মঠের ভিড়। দেখা যায় নি গঙ্গাস্নানের ছবিও।
তবু নববর্ষ পালন হচ্ছে বৈকি, খুব হচ্ছে! বাড়িতে বাড়িতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং মোবাইল ফোনে।