এই মুহূর্তে জেলা

কেঁচো খুঁড়তে কেউটে ! ঔষধের বোতলে দেদার মদ বিকোচ্ছে উলুবেরিয়ায়।

হাওড়া,১০ এপ্রিল:- কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! বাইরে থেকে ওষুধ মনে হলেও ভিতরে যে সুরা ! পুলিশ আর গৃহবধূদের নজর এড়িয়ে মদ্যপায়ীদের কাছে মদ পৌঁছানোর এ এক অভিনব কৌশল দেখা গেলো হাওড়া জেলায়। লকডাউনের মধ্যে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার বেশ কিছু এলাকায় এই কৌশল চালু হয়েছে বলে অভিযোগ। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যখন দেশজুড়ে লকডাউন চলছে তখন আইন-শৃংখলার শিথিলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অভিনব পন্থায় চোলাই থেকে শুরু করে বিদেশী মদের রমরমা কারবার চলছে উলুবেড়িয়া মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে। কয়েকগুন দামে সেই মদই পৌঁছে যাচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। করোনা ভাইরাসের গোষ্ঠী সংক্রমনের ভয়ে পুলিশ মদ সরবরাহকারীদের ধরতে পারছে না। আর আইন-শৃংখলার সেই ছিদ্র দিয়ে গলেই মদের কারবার ফুলে ফেঁপে উঠছে। লকডাউনে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দ্বিগুণ দামে মদ কিনতে আপত্তি নেই ক্রেতাদের।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                         দাম যাই হোক, এক বোতল মদ হাতে এলেই চওড়া হাসি দেখা যাচ্ছে যুবক থেকে বৃদ্ধ সকল মদ্যপায়ীদের মুখে। রাজাপুর থানা এলাকার তুলসীবেড়িয়ার বাসিন্দা কল্যাণী পালুই এলাকার প্রায় ৫০ জন গৃহবধূকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে এসেছেন। এই নারী বাহিনী এলাকা থেকে শতাধিক মদের ভাঁটি ও ঠেক ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। কল্যাণীদেবী জানালেন লকডাউনের জন্যে পুলিশকে এখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। সেই সুযোগ নিয়ে মদ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে মদ সংগ্রহ করে গ্রামের মানুষদের কাছে তা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করছে। তাতে চোলাই থেকে শুরু করে বিদেশী মদ পর্যন্ত থাকছে। তাঁদের দলের মহিলারা এইসব মদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ লিটার করে মদ বাজেয়াপ্ত করছেন। তা সত্ত্বেও ঠেকানো যাচ্ছেনা মদ কারবারীদের। তারা অভিনব পন্থায় গ্রামে গ্রামে মদ পৌঁছে দিচ্ছে। কল্যাণীদেবী জানান পুলিশ এবং নারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বোতলে “নাক্স ভূমিকা” নামের হোমিওপ্যাথি ওষুধের লেভেল এঁটে সেই বোতলে করে মদ সরবরাহ করা হচ্ছে। বাড়ির মহিলারা যখন পুরুষদের জিজ্ঞাসা করছে তারা কী খাচ্ছে ? তখন পুরুষরা সেই ‘নাক্স ভূমিকা’ লেখা বোতল দেখিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়ার অজুহাত খাড়া করছে। কল্যাণীদেবীর অভিযোগ এভাবেই লকডাউনের মধ্যেও উলুবেড়িয়া মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে মদের কারবারিরা সক্রিয় রয়েছে।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                                   এই বিষয়ে উলুবেড়িয়ার আবগারি দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অমিত কাঞ্জিলালের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন কার শরীরে করোনা ভাইরাস আছে আর কার শরীরে নেই তা কেউ বলতে পারবেন না। কিন্তু এখন মদ কারবারীদের ধরতে গিয়ে তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস যদি গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটিয়ে দেয় তাহলে বড় বিপর্যয় দেখা দেবে। তাই এই মুহূর্তে মদ কারবারিদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। গ্রেফতার করে তাদের রাখার কোন জায়গাও তাঁদের নেই। তাই আবগারি দপ্তরের পক্ষ থেকে সমস্ত এলাকায় নিয়মিত ভাবে মাইক প্রচার আর মদ বাজেয়াপ্ত করার কাজ চলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত বিষয়টি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দেখতে হচ্ছে। কোনও মদ কারবারির মাধ্যমে করোনা ভাইরাস যাতে গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবেশ করতে না পারেf সেটাই এখন বেশি করে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে কিছু অসাধু মদ ব্যবসায়ী।

There is no slider selected or the slider was deleted.