হাওড়া,২৪ ফেব্রুয়ারি:- নিজের জীবন বাজি রেখে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা ধাওয়া করে দুষ্কৃতি পাকড়াও করলো এক যুবক। রবিবার সন্ধ্যায় সেই ঘটনা দেখলেন জাগাছা এলাকার পথচলতি মানুষ। জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই হাওড়ার জগাছা এলাকায় বেশ কয়েকটি দুষ্কৃতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। চুরি হয়েছে স্কুটিও। রবিবার সকালে সেই চুরি যাওয়া গাড়ি নিয়ে শিশু চুরির চেষ্টারও অভিযোগ ওঠে। এমনকি জাগাছার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে পথ চলতি মানুষের মোবাইল ছিনতাইয়েরও ঘটনা ঘটে। যার প্রতিটি ঘটনাই হয় স্কুটি বাইক চেপে।রবিবার রাত তখন আটটা সেই সময় জগাছার ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসের সামনে দিয়ে নিজের বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন এলাকার যুবক সৌমিক মুখোপাধ্যায়। হঠাৎ করেই একটি টোটো থেকে চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পান তিনি।
টোটোতে বসা এক যাত্রী চোর চোর বলে চেঁচামেচি করতে থাকে অন্যদিকে টোটো চালকও জোরে টোটো চালিয়ে একটি বাইকের পিছনে তাড়া করতে থাকেন। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তখন নিজের জীবন বাজি রেখে দুষ্কৃতকারীদের বাইকের পিছনে ধাওয়া করেন সৌমিকবাবু। তবে দুষ্কৃতকারীদেরকে তিনি কখনোই বুঝতে দেননি যে তিনি তাদের পিছনে ফলো করছেন। কিছুটা রাস্তা গিয়ে একটি এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাইক দাঁড় করান সৌমিকবাবু। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দুষ্কৃতিরা বুঝতে পেরেই সৌমিকবাবুর গাড়িতে সজোরে লাথি মেরে পালিয়ে যায়। কোনওরকমে নিজেকে সামলে এবার সৌমিকবাবু তাদের পিছনে ধাওয়া করেন। দুষ্কৃতিরা তখন জগাছা ছেড়ে বাঁকড়ার দিকে পালানো চেষ্টা করলে ঠিক জগাছা সাতাশির মোড়ে গিয়ে সুযোগ বুঝে দুষ্কৃতিদের বাইকে সজোরে ধাক্কা মারেন সৌমিক। রাস্তায় ছিটকে পড়ে দুই দুষ্কৃতি। সৌমিকবাবুও ছিটকে পড়ে যান। হাতে ও পায়ে চোটও পান তিনি। এরপর কোনওরকমে উঠে একজন দুষ্কৃতিকে তিনি ধরে ফেলেন। পালাতে সক্ষম হয় আরেকজন। এলাকার লোকদের সাহায্য চান সৌমিক। এলাকার লোকজন ছুটে এসে দুষ্কৃতিকে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় জগাছা থানার পুলিশ। ধরা পড়া যুবককে আটক করে পুলিশ। তার থেকে উদ্ধার হয় চারটি মোবাইল যার মধ্যে তিনটি মোবাইলই ছিনতাই করা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে এরা চুরি করা স্কুটি বাইক নিয়ে ছিনতাইয়ের কাজ চালাচ্ছিল। সৌমিকবাবুর এই সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানান সকলে।