এই মুহূর্তে জেলা

হাসপাতালের বেডে ক্যানসারে আক্রান্ত বাবা কে সাক্ষী রেখে চার হাত হল এক  ।

 

হাওড়া,১২ ফেব্রুয়ারি:- তিন বছর আগে প্রথম পরিচয়। তারপর প্রেম। তারপর চার হাত একে হতে সাক্ষী থাকল পরিচিতরা। ছক-ভাঙা ভালোবাসা গল্পের মধ্যেও আটকে ছিল ক্যানসার আক্রান্ত বাবাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের রিসার্চ স্কলার মেয়ে দিওত্তিমা সরকার বিয়ের রেজিস্ট্রির মুহূর্ত কাটাল বেসরকারি হাসাপাতালের বেডে শুয়ে থাকা বাবার সামনে। সরস্বতী পুজোর দিনে আর পাঁচটা মেয়ের মতো শাড়ি, সাজ, অঞ্জলি, প্রেম, ঘোড়া, কুল খাওয়া কিছুই হয়ে ওঠেনি। আন্দুলের নারায়ানা তে ভর্তি বাবার রক্তে যাতে অক্সিজেন ওঠে সেই প্রার্থনা আর ভিস্টিং সময় এ কেমন দেখবো সেই চিন্তা তেই গেছে। কিন্তু বাবা সন্দীপ কুমার সরকার ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে লড়াই করছে। তাঁকে সুস্থ করে তোলাটাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। ফেরার পথে শহরটার আনন্দ দেখে মন টা একটু আনচান করেছিল। বাবা-মায়ের সম্বল তো সন্তানরাই। সে হোক না মেয়ে। বাবার ইচ্ছা কে মান্যতা দেওয়াটাই হয়ে উঠুক পরম্পরা।

There is no slider selected or the slider was deleted.

২৯ বছরের দিওত্তিমার পরনে ছিল হলুদ রঙের কাঞ্জীবরন শাড়ি ও লাল ব্লাউজ। সুদীপ পড়েছিল কালচে খয়েরি পাঞ্জাবি। ভালোবাসার মানুষ সুদীপ কুন্ডু একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজার। তিন বছর আগে আলাপ। তারপর প্রেম। প্রেম দিবসের প্রাক্কালেই চার হাত হয়েছে এক। দিওত্তিমার কথায়, বাবার জন্য এই ডিসিশন নিয়েছি আমরা। যাতে বাবা সাক্ষী থেকে এই জিনিস টা দেখে যেতে পারে। আর সুদীপ জানিয়েছে, আমার পরিবার প্রথম থেকে আমাকে সাহায্য করেছে। সবাই পাশে থেকেছে। তাই এই কাজ করতে পেরেছি।

There is no slider selected or the slider was deleted.

বাবা সন্দীপ কুমার সরকারের বর্তমান বয়স ৬১। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। চাকরি করতেন পূর্ব রেলে। ২০১১ সালে ধরা পড়ে ক্যানসার। ২০১৬ সালে চাকরি জীবন থেকে স্বেচ্ছাবসার নেন। ২০১৭ সালের পর থেকে বেশিরভাগ সময় কাটে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে। জানুয়ারি মাস থেকে নারায়না তে ভর্তি। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন সময় ফুরিয়ে আসছে। বৃদ্ধ চেয়েছিলেন মেয়ের বিয়ে দেখে যেতে। সেইমতন রোগীর ইচ্ছে কে গুরুত্ব দিয়েছে হাসপাতাল। আর কয়েক দিন বাদেই বিয়ের সামাজিক অনুষ্ঠান। দিওত্তিমা চায় ওইদিন যদি হাসপাতাল ছাড়ে তো একদিনের জন্য বাবাকে বাড়িতে নিয়ে যাব। বিয়ের সময় সামনে থাকুক বাবা। কিন্তু সন্দীপ বাবুর সময় যে কমে আসছে !

There is no slider selected or the slider was deleted.