হাওড়া,১৮ জানুয়ারি:- পরিযায়ী পাখির সংখ্যা অনেকটাই বাড়ল সাঁতরাগাছি পাখিরালয়ে। গত বছরের তুলনায় এবার পাখি বাড়ায় খুশি পক্ষীপ্রেমিরা । ২০১৯ সালে যেখানে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা যেখানে ছিল ২,৮৮৯ ; এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪,৫৪০। বন দপ্তরের সহায়তায় ‘প্রকৃতি সংসদ’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ২ দিনের এক কর্মসূচি নেওয়া হয়। শনিবার প্রথম দিনে সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখি গণনা হয়। তাদের গনণায় এদিন ১২টি প্রজাতির মোট ৪,৫৪০টি পরিযায়ী পাখি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দেশীয় পরিযায়ী পাখি ছাড়াও সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া ও ইউরোপের বেশ কিছু পরিযায়ী পাখিও রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে এবার সাঁতরাগাছি ঝিলে ছোট ছোট কচুরিপানার দ্বীপগুলি অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গিয়োছিল।
অতিথি পাখীদের বিশ্রাম নেওয়ার ওই জায়গাগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখানে আর পরিযায়ী পাখি আসবে কিনা তা নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমীরাও উৎকন্ঠায় ছিলেন। কিন্তু ‘বায়ো ডাইভারসিটি বোর্ড‘, হাওড়া পুরনিগম, সিটি পুলিশ, রেল কর্তৃপক্ষ ও কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তৎপরতায় কচুরিপানার ছোট ছোট আইল্যান্ডগুলিকে পুণরায় দ্রুত তৈরি করে দেওয়া হয়। আর এরফলেই এবছর সাঁতরাগাছি পাখিরালয়ে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন পাখি গণনা প্রসঙ্গে প্রকৃতি সংসদের সহ সম্পাদক অপূর্ব চক্রবর্তী জানান, সাঁতরাগাছি ঝিলে গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি পরিযায়ী পাখি এসেছে। এর প্রধান কারণ দূষণ আগের থেকে অনেকটা কমেছে। এছাড়া সাঁতরাগাছি ঝিল ঠিকঠাক সংস্কার করা হয়েছে। পরিযায়ী পাখিদের বসার জন্য কচুরিপানার ছোট আইল্যান্ডগুলি ঠিকভাবে তৈরি করা হয়েছে। আগে ঝিল পুরো কচুরিপানায় ভর্তি থাকায় পরিযায়ী পাখিদের বসতে সমস্যা হচ্ছিল। এইরকম উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে আগামী বছর সাঁতরাগাছি পাখিরালয়ে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি মনে করছেন। জানা গেছে, এবছর দেশীয় পরিযায়ী পাখি সহ সাইবেরিয়া থেকেও একাধিক পরিযায়ী পাখি এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাডওয়াল বা পিং হাঁস, ফেরিজিনিয়াস বা ভূতি হাঁস ও গারগেনি বা গিরিয়া হাঁস, নর্দান পিনটেল। এছাড়াও রয়েছে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা একাধিক পরিযায়ী পাখি। এর মধ্যে লেসার হুইসিলিং ডাক বা ছোট সরাল, কমন মুরহেন বা জলমুরগী, ইন্ডিয়ান পন্ড হ্যারন বা কোঁচ বক প্রভৃতি। এদিকে, পরিযায়ী পাখি দেখতে এবার ফের সাঁতরাগাছি ঝিলে ভিড় জমাচ্ছেন পক্ষী বিশেষজ্ঞ ও প্রকৃতি প্রেমিরা।