এই মুহূর্তে জেলা

হাওড়ার দাশনগরে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর কান্ডের কিনারা। ধৃত ৫।


হাওড়া,২৬ নভেম্বর:- অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ঘর তৈরি হওয়ায় যাতায়াতের পথ সংকীর্ণ হয়ে পড়েছিল। এতে এলাকার মানুষের যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছিল। সেই কারনেই এলাকার বাসিন্দারা হামলা চালিয়েছিল বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে। রবিবার রাতে হাওড়ার ক্লাবে রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতী হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাস্তা অবরোধ এবং দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। রবিবার রাতে ওই ক্লাবে হামলা চালায় দুষ্কৃতি। সোমবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। রাস্তার ধারে একটি বন্ধ দোকানে ভাঙচুর করা হয়। রবিবার দাশনগর থানা এলাকার বালিটিকুরি সুরকি মিলের কাছে একটি ক্লাবে হামলা চালায় দুষ্কৃতিরা। ভাঙচুর করা হয় ক্লাবের অ্যাম্বুলেন্স। ভেঙে ফেলা হয় ক্লাবের দেওয়াল। এনিয়ে সোমবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। উত্তেজিত জনতা রাস্তার উপর একটি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এর পাশাপাশি হাওড়া আমতা রোড অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। পরে পুলিশি দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। রবিবার রাতের ঘটনা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের চালক সুমিত নন্দী দাশনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম অভিষেক দাস, শুভঙ্কর দে, শ্রাবন্তী সিং, কল্পনা সিং এবং চম্পা দেব। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৪২৭(সম্পত্তি নষ্ট), ৪৪৭(অপরাধ্মূলক কাজের জন্য আসা), ৫০৬(হুমকি) এবং অস্ত্র আইন সহ একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতদের হাওড়া জেলা আদালতে নিয়ে আসা হলে অভিষেক দাস, শুভঙ্কর দে’কে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। বাকি তিন অভিযুক্ত শ্রাবন্তী সিং, কল্পনা সিং এবং চম্পা দেবকে জামিনের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, হাওড়ার বালটিকুরি সুরকি মিলের কাছে স্থানীয় একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে রাস্তার উপর একটি ঘর তৈরি করে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়। এতে ৮ ফুটের রাস্তা হয়ে যায় ৩ ফুট। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নবনির্মিত ঘরটির পিছনে বসবাসকারী বাসিন্দাদের সমস্যা হচ্ছিল। বারবার ক্লাবের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও সমস্যার সুরাহা হয়নি। সোমবার সকালে সেই ক্ষোভেরই চুড়ান্ত পরিণতি ঘটে। অভিযোগ, ওইদিন রাতে এলাকার বাসিন্দা সাগর নামে এক যুবকের নেতৃত্বে প্রায় ১০-১২ জন স্থানীয় সেই ক্লাবে আসেন। সেই দলে মহিলারাও ছিলেন। তাদের হাতে লোহার রড, লাঠি ছিল। অভিযোগ এরপর তাঁরা অ্যাম্বুলেন্সের ঘর ভাঙচুর করা হয়। ঘরে থাকা অ্যাম্বুলেন্সও ভাঙচুর করা হয়। সেখানে উপস্থিত অ্যাম্বুলেন্স চালক সুমিতকে গালিলাজ করা হয়। ভয় দেখানো হয়। শুধু তাই নয় তাকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সুমিতবাবুর। এরপর সুমিতবাবু দাসনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। প্রতিবাদে সোমবার সকালে তাঁরা হাওড়া আমতা রোড অবরোধ করেন। পুলিশি আশ্বাসে অবশেষে প্রায় ২ ঘন্টা পর অবরোধ উঠে যায়। এরপর অভিযোগ হাতে পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রায় ১২ ঘন্টা পর ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত ৫ জনকে। মঙ্গলবার তাঁদের সকলকে হাওড়া জেলা মাদালতে তোলা হয়।