হুগলি, ১১ জুলাই:- ধৃতদের মধ্যে অভিষেক রায় এর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দেওঘর এবং কলকাতার গড়িয়া এলাকাতেও একটি ফ্লাট আছে তার। অন্যজন জাহির আব্বাস, বাড়ি হুগলির খানকুলে। এরা দুজনে প্রধান অভিযুক্তের ম্যানেজার হিসাবে পরিচয় দিয়ে সম্পর্ক তৈরী করেছিলেন। ম্যাট্রমনি সাইট এর পরিচয়ের মাধ্যমে এত বড় ধরনের প্রতারনা হুগলি জেলা এই প্রথম বলে দাবি পুলিশের। এদিন হুগলী জেলার কামারকুন্ডুতে সাইবার ক্রাইম থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন হুগলি গ্রামীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার। তিনি জানান, গত ২৬ মে হুগলীর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক তরুণী। সেখানে তিনি জানান, ম্যাট্রিমনিতে এক ব্যবসায়ীর সাথে পরিচয় হয়। এরপর বিবাহের প্রস্তাবের মাধ্যমে দুপক্ষের সম্পর্ক দৃঢ় হয়। ওই তরুণী ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে ওই ব্যবসায়ী তরুণী কে জানান জি এস সি সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবসায়িক সমস্যা তৈরী হয়েছে। সেই কারনে তার সমস্ত ব্যাঙ্কের এক্যাউন্ট সীল করে দেওয়া হয়েছে। কিছু অর্থের প্রয়োজন, টাকা দিলে তার সমস্ত এক্যাউন্ট ওপেন হয়ে যাবে। এই টোপ দিয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ধাপে ধাপে মোট পাঁচটি এক্যাউন্ট থেকে ৪৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় তরুনীর পরিবারের থেকে।
এরপরেই অন লাইন সাইট থেকে ব্যবসায়ী তার এক্যাউন্ট সরিয়ে নেয়। এবং তার সাথে আর যোগাযোগ করতে পারিনি তরুনীর পরিবারের লোকজন। তরুনীর পরিবারের লোকজন হুগলী জেলা গ্রামীণ পুলিশের সাইবার থানায় যোগাযোগ করেন। সেই মতো গত ৬ই মে কামার কুন্ডু সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এবং পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নেমে প্রতারকের ম্যানেজার অভিষেক রায়কে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এবং তার উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিষেকের সূত্র ধরে গত ৯ই জুলাই গভীর রাতে হুগলীর খানাকুল থেকে জাহির আব্বাস নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয় তাকেও ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল অভিযুক্ত ব্যবসায়ী। যদিও এখনো অধরা মুল অভিযুক্ত। পুলিশের আরো দাবি, ধৃত অভিষেক রায় এর ব্যাঙ্ক একাউন্ট প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা ঢুকেছে এবং জাহির আব্বাসের অ্যাকাউন্টেও বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ঢুকেছে। এখন অবধি ছ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার আটকানো গেছে, যেটি ব্যাঙ্ক এক্যাউন্টে হোল্ড করানো গেছে। পাশাপাশি পুলিশের দাবি, এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত খুব শীঘ্রই তাদের জালে ধরা পড়বে। ধৃতদের কাছ থেকে ৩টি মোবাইল ফোন, একাধিক এটিএম কার্ড এবং ব্যাঙ্কের পাস বুক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সেই সাথে এই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত আছে কিনা এবং অভিযুক্তরা এর আগে এই ধরনের আর কোন প্রতারণা করেছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন পুলিশ আধিকারিকরা।