সুদীপ দাস,৬ এপ্রিল:- প্রতি বছর বাঙালি ব্যবসায়ীরা পয়লা বৈশাখে হালখাতা করেন । অর্থাৎ লক্ষ্মী গণেশের পুজো করে নতুন বছরের ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু এ বছর তা ভেস্তে যেতে বসেছে করোনার আতঙ্কে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ মানুষজন বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না ,হাতে গোনা কয়েকটি দোকান খোলা আছে । অথচ অন্য বছর আমরা কি দেখি সারাবছর ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা চালান। খুচরো যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা আছেন তারা বড় ব্যবসায়ী অর্থাৎ মহাজনদের কাছ থেকে মাল কেনেন এবং ধারে কেনাবেচা হয় । সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও সাধারণ ক্রেতাদেরও ধারে মাল দেন। সারা বছর এইভাবে চলে। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদেরও তেমনি ক্রেতাসাধারণ বৈশাখ মাসের আগে দোকানদারদের সারাবছর বাকি মিটিয়ে আবার নতুনভাবে খাতা চালু করেন । এই ব্যাবস্থা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু এবছর মারণ ব্যাধি করোনার থাবায় কাঁপছে সারা বিশ্ব। জনজীবন থমকে গেছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যও লাটে উঠেছে ।
মানুষরাও বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না । তাদের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। এবং তারা যে আগামী মাসগুলোতে যে বেতন পাবেন তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। এই অবস্থায় দোকানদাররা জানাচ্ছেন খরিদ্দার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে এই মুহূর্তে তাদের ধার মেটাবার ক্ষমতা নেই। যতক্ষণ না অবস্থা স্বাভাবিক হচ্ছে যতক্ষন না কাজে বের হয়ে পারছি আমরা ধার মেটাতে পারব না। তাতে যদি আপনারা মাল দেন ভালো যদি না দেন তাতেও কোনো ক্ষতি নেই কারণ আমরা অপারগ। এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ক্ষুদ্রব্যবসায়ী যারা আছেন তাদের নাওয়া-খাওয়া-ঘুম একেবারে উড়ে গেছে ।তাদের একটাই চিন্তা কিভাবে তারা মহাজনদের বকেয়া মিটিয়ে নতুন ভাবে আবার ব্যবসা শুরু করবেন। শুধু তাই নয় ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এবারে যা অবস্থা তাতে পয়লা বৈশাখের যে হালখাতার পুজো সেটাও হয়তো তারা করতে পারবেন না । কারণ মানুষজন বেরোচ্ছে না। পুরহিত পাওয়া যাবে না। যদি এইভাবে চলতে থাকে তাহলে আগামী রথের দিন দোকান পুজো করে ব্যাবসা শুরু করা ছাড়া উপায় নেই।