এই মুহূর্তে কলকাতা

পুজোর মুখে রাজ্যের একাধিক জেলায় প্লাবন।

কলকাতা, ৫ অক্টোবর:- মেঘভাঙা বৃষ্টি ও একাধিক জলাধার থেকে ছাড়া জলে পুজোর মুখে রাজ্যের একাধিক জেলা প্লাবন দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমলেও বাঁধ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ায় পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেকা দিয়েছে। ডিভিসির বিভিন্ন বাঁধ থেকে ফের জল ছাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডিভিসির জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লাগাতার বৃষ্টিপাতের ফলে দামোদর এবং বরাকর নদীতে প্রচুর পরিমাণে জল এসে ঢুকছে। ডিভিসি সকাল ১১ টা নাগাদ মাইথন থেকে ৩০ হাজার এবং পাঞ্চেত থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু করে। মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে বেশি জল ছাড়ায়, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আজ সকাল ন’টা পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ৮৬ হাজা ৯৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তেনুঘাট এবং কোনার ড্যাম থেকেও জল ছাড়া হচ্ছে। যার ফলে মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারে চাপ বাড়ছে।

তাই বন্যার আশঙ্কা থাকলেও জলাধারে বাড়তি জল ছাড়া হচ্ছে মাইথন এবং পাঞ্চেত ড্যাম থেকে। একই কারণে জল ছাড়ছে দুর্গাপুর ব্যারেজও। আবার নতুন করে জল ছাড়া দুর্গাপুর, বাঁকুড়া পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।নিম্ন গঙ্গা অববাহিকায় বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বন্য়া পরিস্থিতিতে প্রাণহানীর ঘটনা ঠেকাতে রাজ্যের ৯টি জেলায় মোট ২০৪টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। বিপদজনক এলাকা থেকে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় ২টি এনডিআরএফ দল মোতায়েন রাখা হয়েছে। দার্জিলিং জেলায় ১টি দল এবং শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকায় ১টি দল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ৭টি এসডিআরএফ দলও মোতায়েন রাখা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে বুকে হুগলি ও হাওড়া জেলায় ২টি করে ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১টি এসডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যের ১৯১ টি ত্রাণ শিবিরে ৯২১৫ জনকে রাখা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে ৪জেলায় খোলা হয়েছে মোট ২৫টি ত্রাণ শিবির। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে কালিংম্পং জেলায়, ১০ টি।

জলপাইগুড়িতে ৮ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। কোচবিহারে খোলা হয়েছে ৫টি ও দার্জিলিং জেলায় খোলা হয়েছে ২টি ত্রাণ শিবির। জলপাইগুড়ি জেলার ত্রাণ শিবিরে রয়েছে ১ হাজার ৩৯০জন, কালিম্পংয়ের ত্রাণশিবিরে রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৯জন, কোচবিহারের ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ৩৭৬জন এবং দার্জিলিংয়ের ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ২১৯জন। সব মিলিয়ে উত্তরের ৪টি জেলার ২৫টি ত্রাণ শিবিরে এখন রয়েছেন ৩ হাজার ৫৮৪ জন। দক্ষিণবঙ্গে প্লাবনের কবলে পড়া ৫টি জেলায় খোলা হয়েছে ১৬৬ টি ত্রাণ শিবির। এর মধ্যে ৮৮ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। ৩৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে হুগলি জেলায়। ২৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে পুরুলিয়া জেলায়। হাওড়া জেলায় খোলা হয়েছে ১২ টি ত্রাণ শিবির। বাঁকুড়া জেলায় খোলা হয়েছে ১০ টি ত্রাণ শিবির। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ত্রাণশিবিরে ২৩১৩ জন রয়েছেন, ১ হাজার ১০৪জন রয়েছেন হুগলি জেলার ত্রাণ শিবিরে, ১হাজার ৫১৪ জন রয়েছেন হাওড়া জেলার ত্রাণশিবিরে, পুরুলিয়ার ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৫৫৯ জন এবং বাঁকুড়া জেলার ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ১৪১ জন। সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গের ১৬৬টি ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ৫ হাজার ৬৩১ জন।