কলকাতা, ৫ ফেব্রুয়ারি:- জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের জন্য স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ এবার রেকর্ড রাজস্ব আদায় করতে চলেছে রাজ্য সরকার। চলতি অর্থবর্ষে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই খাতে আয়ের হার দেখে এমনই অভিমত রাজ্যের প্রশাসনিক মহলের আধিকারিকদের। এখনকার অঙ্কের তুলনায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত আদায়ের অঙ্কটা আরও বাড়তে পারে বলে তাঁদের আশা। কোভিড পরিস্থিতিতে জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশনের স্ট্যাম্প ডিউটিতে ২ শতাংশ ছাড়ের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা ২০২১ সালের জুলাই মাস। তারপর থেকে এই খাতে রাজস্ব আদায় বাড়তে শুরু করে। এই ছাড়ের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত থাকছে। নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হতে এখনও বাকি প্রায় দু’মাস।নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যে স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ৫,২৭৯ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা আয় হয়েছিল।
২০২১-২২ আর্থিক বছরে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৭,০৯৩ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকায়। তার মধ্যে ৫০৭৬ কোটিই আসে প্রথম ন’মাসে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে প্রথম ন’মাসের আদায় সেই অঙ্ককেও ছাপিয়ে গিয়েছে। পরিমাণটা প্রায় ৫১২২ কোটি টাকা। আর সদ্য শেষ হওয়া জানুয়ারি মাসে এই খাতে যোগ হয়েছে আরও ৫০০ কোটি টাকারও বেশি অঙ্কের টাকা। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, অর্থবর্ষের শেষ দু’মাসে এই ছাড় বহাল থাকছে। ফলে জমি-বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার আগ্রহ বাড়বে। ফলে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতেও বাড়বে আদায়। নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, গতবার এই খাতে আদায় সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছিল। চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত যা গতিপ্রকৃতি, তাতে স্ট্যাম্প ডিউটি সংগ্রহের ক্ষেত্রে রাজ্যে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য এব্যাপারে যাবতীয় কৃতিত্ব দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর দাবি, ‘এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শিতার ফল। রাজস্ব আদায়ের থেকেও বড় বিষয় হল, এই সিদ্ধান্তের কারণে বহু মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’ রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আগেই স্বাগত জানিয়েছিলেন আবাসন নির্মাতা সংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠন ক্রেডাইয়ের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি সুশীল মোহতা। এপ্রসঙ্গে আরও একধাপ এগিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘চলতি অর্থবর্ষে এর মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে বলে আশা করছি।’ এই আবর্তে আসন্ন রাজ্য বাজেটে স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড়ের মেয়াদ সরকার আরও বাড়ায় কি না, সেদিকেই এখন নজর সকলের। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সেই বাজেট।