এই মুহূর্তে জেলা

রথে নয় সাংসদের কোলে করেই মাসির বাড়ি পৌঁছল নারায়ণ শিলা।


হুগলি, ১২ জুলাই:- গত বছরের মতো এবারেও মাহেশের রথের চাকা গড়ালো নাম রাজপথে। পরিবর্তে মাহেশে মূল মন্দির থেকে জগন্নাথ দেবের প্রতিরূপ হিসেবে নারায়ন শিলাকে পদব্রজে নিয়ে আসা হল জগন্নাথ মন্দির থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মাসির বাড়িতে। মাসির বাড়ি পর্যন্ত নারায়ণ শিলা কোলে করে নিয়ে গেলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। সোমবার বিকেলে চারটে নাগাদ মাহেশ জগন্নাথ মন্দির থেকে নারায়ণ শিলা নিয়ে মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন সাংসদ। সঙ্গে ছিলেন মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত সোমেন অধিকারী, পিয়াল অধিকারী এবং অন্যান্য সেবাইতরা। মাহেশের রথযাত্রা ৬২৫ বছরে পড়লো। প্রাচীন প্রথায় ছেদ পড়লেও পুজোর নিয়ম নিষ্ঠা বা আচার রীতিতে কোনও রকম পরিবর্তন হয়নি।

মন্দির থেকে বেরিয়ে নারায়ণ শিলা কোলে বেরিয়ে প্রথা অনুসারে জগন্নাথ দেবের বিশাল রথের চারদিকে তিনবার প্রদক্ষিণ করে দামোদর সম্পূর্ণ করেন সাংসদ। একইসঙ্গে সেখানে চলে রথকে কেন্দ্র করে পুজোপাঠ। তার পর সেবাইতদের সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেঁটেই মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন কল্যাণ ব্যানার্জি।এবছর মন্দির চত্ত্বরে মানুষের তেমন ভিড় ছিলোনা। স্নান পীড়ির মাঠও ছিল ফাঁকা, মেলা বসেনি। মাঠে ছোট দোকান পাটও এদিন নজরে পড়েনি। মন্দিরের মূল ফটক খোলা থাকলেও সেখানে ছিল পুলিশের করা পাহারা। এদিন সকাল আটটা নাগাদ ঠাকুরকে ভোগ নিবেদন করা হয়। তার কিছুক্ষন পরেই বিগ্রহ বের করে আনা হয় মন্দিরের চাতালে। তার পর সারা দিন সেখানেই চলে পুজোপাঠ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট দুরত্ত্ব বজায় রেখে এদিন মন্দিরে পুজো চলেছে। নির্ধারিত নিয়ম মেনে সেখানে পুজো দেন ভক্তরা। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবছর রথযাত্রা উৎসব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ।

প্রধান সেবাইত সোমেন অধিকারী জানিয়েছেন, এবছর রথের দড়িতে টান পড়েনি। কোলে করে নারায়ণ শিলা মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে মন্দিরের ভেতরেই একটি অস্থায়ী মাসির বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। নারায়ণ শিলা মাসির বকরি রওনা হলেই বিগ্রহ সেই অস্থায়ী মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। রথযাত্রা উৎসবের ঠিক ৯ দিনের মাথায় উল্টো রথ। সেদিন দিন মাসির বাড়ি থেকে নারায়ণ শিলা পুনরায় মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সেদিনই বিগ্রহ তিনটিকেও আবার গর্ভগৃহে ফিরিয়ে আনা হবে।করোনা আবহের কারণে প্রাচীন প্রথায় সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্বাস্থবিধি মেনে মাস্ক স্যানেটাইজার ব্যবহার করে নিরাপদ দুরত্ত্ব বজায় রেখে পুজোর যাবতীয় আচার পালন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে ভক্তদের নিয়ে এদিন নিষ্ঠার সঙ্গে রথযাত্রা উৎসভ পালন করা হয়েছে।